জামালপুরে গাছ বিক্রির দ্বন্দ্বে মাকে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার

জামালপুর শহরতলীর চন্দ্রা ঘুন্টি এলাকায় মাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছেলে মঞ্জুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় সে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার নাওভাঙ্গাচরের দক্ষিণ পাড়া গ্রামে তার বাবা তোতা মিয়ার বাড়িতে অবস্থান করছিল। পুলিশের এক বিশেষ অভিযানে ভোররাতে তাকে আটক করা হয়।

জামালপুর থানার ওসি (তদন্ত) আনিসুর আশেকীন জানান, গত ১৫ এপ্রিল সকালে গাছ বিক্রির টাকা নিয়ে মঞ্জুর সঙ্গে তার মা মঞ্জিলা বেগমের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত মঞ্জু ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যা করে এবং পাশে থাকা গাছ কাটতে আসা এক ব্যক্তিকেও আহত করে।

ঘটনার পরপরই মঞ্জু এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে নিহত মঞ্জিলা বেগমের ছোট ছেলে জীবন বাদী হয়ে জামালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে পুলিশ তৎপরতা শুরু করে এবং অবশেষে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে ওসি আশেকীন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মঞ্জু জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মায়ের কাছ থেকে অবহেলা ও অবজ্ঞার শিকার হচ্ছিল সে। এছাড়া, পরিবারের সিদ্ধান্তে কম দামে গাছ বিক্রি হওয়ায় তার মধ্যে ক্ষোভ জমে ওঠে। এই ক্ষোভ থেকেই সে মাকে হত্যা করে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মঞ্জু কিছুটা রুক্ষ স্বভাবের হলেও এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড কেউ প্রত্যাশা করেনি। এলাকাবাসী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

ময়নাতদন্তের জন্য নিহত মঞ্জিলা বেগমের মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মা হত্যার অভিযোগে ছেলের গ্রেপ্তারের ঘটনায় কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে পারিবারিক অবক্ষয়ের ফলাফল বলছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত মঞ্জুকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে। তদন্ত শেষে পুরো ঘটনার পেছনের বিস্তারিত কারণ আরও স্পষ্ট হবে বলে তারা জানিয়েছে।