জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর শহরে জেলা ছাত্রদলের সাবেক জনপ্রিয় নেতা মোঃ শামীম হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছয়জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী একাধিক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান শামীম। এ সময় স্থানীয় জনতা ধাওয়া দিয়ে একজন কিলারকে পিস্তল ও ৫ রাউন্ড গুলিসহ আটক করে গণপিটুনি দেয়। বাকি পাঁচজন পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌর সুপার মার্কেটে অবস্থিত বায়েজিদের কাপড়ের দোকানের সামনে। শামীম হোসেন সেখানে ব্যবসায়িক কাজে উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী যুবদল নেতা হারুন জানান, “সারাদিন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান শেষে শামীম দোকানে ছিলেন। হঠাৎ করে দুইটি মোটরসাইকেলে করে ছয়জন যুবক এসে দোকানের সামনে দাঁড়ায়। তাদের মধ্যে হেলমেট পরা একজন শামীমকে দেখিয়ে দিলে বাকিরা তার ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে।”
শামীম গুলির শব্দ শুনেই দ্রুত নিচে শুয়ে পড়েন, ফলে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় এবং তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
যুবদল নেতা সজল বলেন, “গুলির পরপরই একজন কিলার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়, আর অন্যরা দৌড় দেয়। এ সময় এক কিলারকে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলে। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।”
আটককৃত ব্যক্তি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের শাহাদত মোল্লার ছেলে কোয়েল হোসেন (২৮)।
ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ আহত অবস্থায় কোয়েল হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
সাবেক ছাত্রদল নেতা শামীম হোসেন বলেন, “পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাবিকুন নাহার শিখার স্বামী শাহ কামাল এই হামলার পেছনে রয়েছেন। তিনি ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছেন।”
অভিযোগের বিষয়ে শাহ কামালের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে হোয়াটস্যাপে দেওয়া এক বার্তায় সাবেক চেয়ারম্যান সাবিকুন নাহার শিখা জানান, “আমরা স্বপরিবারে দেশের বাইরে আছি। শামীমের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মইনুল হোসেন জানান, “একজনকে পিস্তল ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে। একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
স্থানীয়ভাবে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক মহলেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।