হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর পাঙ্গাস মুক্তা ও তার স্বামী ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে এবার পবিত্র কোরআনের সূরা ফাতেহা অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ সচেতন নাগরিকরা এই কনটেন্টের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত শনিবার বিকেলে, যখন একটি কনটেন্ট ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, ইব্রাহিম নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন এবং মুক্তা বারান্দার সিঁড়িতে বসে চাউল খুঁটছিলেন। এসময় ইব্রাহিমের ধাক্কায় চাউলের পাতিল পড়ে গেলে, মুক্তা ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে বলে উঠেন “মালিকী ইয়াওমিদ্দিন”, যার জবাবে ইব্রাহিম বলেন “ইয়্যাকা নাবুদু অইয়্যাকা নাস্তাঈন, আমি নামাজ পড়তে যাই।” স্বামী-স্ত্রীর কথোপকথনটিকে ব্যঙ্গাত্মক এবং কোরআনের আয়াত নিয়ে তামাশা বলে আখ্যায়িত করেছেন অনেকেই।
ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকেই হবিগঞ্জ জেলায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এটিকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে উল্লেখ করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। অনেকে মন্তব্য করেন, “ফাজলামিরও একটা সীমা আছে। কনটেন্ট বানানো আপনার অধিকার, কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতিকে কটাক্ষ করার অধিকার কারো নেই।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঙ্গাস মুক্তা ও ইব্রাহিম চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ইকরতলি গ্রামের বাসিন্দা। তাদের আদি বাড়ি একই উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ ছয়শ্রী গ্রামে। ইব্রাহিম এক সময় কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন, তবে গত কয়েক বছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন বিতর্কিত কনটেন্ট তৈরি করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
মুক্তা আক্তার, যিনি পাঙ্গাস মুক্তা নামে পরিচিত, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামানত হারান। বর্তমানে তার নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি কনটেন্ট তৈরির দল রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে আগেও বিতর্কিত কনটেন্ট তৈরির অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি হাফেজ নাছির উদ্দিন বলেন, “এটি কোরআন শরীফের স্পষ্ট অবমাননা, যা কুফরীর শামিল।” তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলমের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে বিষয়টি চুনারুঘাট-মাধবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারকে অবগত করা হয়েছে।
সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এবং বলেছেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মাধ্যমে কোনোভাবেই কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়া যায় না।