প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ২১:৫৮
বহুল আলোচিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫-এ যুক্ত হওয়া কিছু বিতর্কিত ধারা অবশেষে বাতিলের পথে যাচ্ছে। সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলোর তীব্র বিরোধিতার পর সরকার ও সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নতুন করে সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ২৫ জুন অনুষ্ঠিত বৈঠকে অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা কমিটি ও কর্মচারী নেতারা অধ্যাদেশের বেশ কয়েকটি ধারা বাদ দেওয়ার বিষয়ে একমত হন।
বিশেষ করে অনানুগত্য, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি এবং প্ররোচনার অভিযোগে চাকরি থেকে সরাসরি অপসারণের বিধানটি প্রত্যাহার করে সেখানে বাধ্যতামূলক অবসরের বিধান যোগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২৫ মে জারি করা অধ্যাদেশের ৩৭ ধারার (ক), (খ) ও (গ) ধারাগুলোর শব্দচয়ন ছিল অতিমাত্রায় কঠোর এবং তা কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি ছড়ায়। এসব ধারায় কর্মচারী কর্তৃক অনুগত্যহীনতা বা কর্মবিরতি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতো এবং সরাসরি শাস্তি প্রদান করা হতো। এসব ধারার পরিবর্তে এখন আরো স্পষ্ট ও যৌক্তিক শব্দ ব্যবহার করে নতুনভাবে পুনর্লিখনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আলোচনার ভিত্তিতে এখন কোনো কর্মচারী অপরাধে অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হবে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রাখা হবে। তদন্ত কমিটিতে তিনজন সদস্য থাকবেন এবং অভিযোগ উত্থাপনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। বিশেষ করে নারী কর্মচারীদের জন্য তদন্ত কমিটিতে একজন নারী সদস্য রাখার বিধানও যুক্ত হয়েছে। একইসঙ্গে অভিযোগ গঠন, শুনানি এবং আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৭, ১৪ এবং ৩০ দিনের মধ্যে।
অধ্যাদেশ সংশোধনের মাধ্যমে কর্মচারীদের নিরাপত্তা এবং সুবিচার নিশ্চিতের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকেই। একাধিক কর্মচারী নেতা ও আইনবিদ মনে করেন, এই সংশোধন কর্মচারী সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে একটি বড় অগ্রগতি। যদিও এই অধ্যাদেশ এখনও পুরোপুরি চূড়ান্ত নয়, তবে আলোচনা এবং সমঝোতার মধ্য দিয়ে এর সংশোধন একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের ইঙ্গিত দিচ্ছে।