সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, তার ছোট ভাই মির্জা ফয়সল আমিন এবং পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটায় ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালন করে জেলা বিএনপি, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, সম্প্রতি জ্যাকব মিল্টন নামের এক ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, তার ছোট ভাই মির্জা ফয়সল আমিন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও কাল্পনিক প্রচার চালিয়েছেন। এতে শুধু ব্যক্তি নয়, রাজনৈতিক দলের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
বক্তারা বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুধু ঠাকুরগাঁও নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব। একজন সৎ, নম্র ও ভদ্র রাজনীতিক হিসেবে তার পরিচিতি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। বক্তারা অভিযোগ করেন, জ্যাকব মিল্টন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
বক্তারা আরও জানান, আইনজীবীরা ইতোমধ্যে জ্যাকব মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যারা অপপ্রচারের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিবেশ ঘোলাটে করতে চায়, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
সমাবেশে পৌর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ অ্যাডভোকেট, শিক্ষক ও ব্যবসায়ী নেতারাও।
বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, মির্জা ফখরুল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে একটি ভিডিও প্রকাশ করে জ্যাকব মিল্টন। সেই ভিডিওতে মির্জা ফয়সাল আমিনের গাড়ি কেনা থেকে শুরু করে, প্রশাসনের বদলির বিষয়ে প্রভাব খাটানো, বড় অঙ্কের লেনদেন, সরকারি প্রকল্পে চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগ তোলা হয়।
বক্তারা বলেন, এসব ভিত্তিহীন অভিযোগের একটিও প্রমাণিত নয়। বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিবারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে।
জেলা বিএনপির নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি জ্যাকব মিল্টনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে তারা রাজপথে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবেন।
মানববন্ধন ঘিরে এলাকাজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রতিবাদে অংশ নেয়া সাধারণ মানুষ জানান, তারা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, বরং একজন জনপ্রিয় ও নীতিবান নেতার সম্মান রক্ষায় প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন।
এ সময় আইনজীবীরা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা তথ্য প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের শামিল। বক্তারা সরকারের কাছে অনুরোধ জানান, যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য সন্ত্রাস বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়।
মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।