ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নে সরকারি খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পুটিয়াখালি গ্রাম থেকে শুরু হয়ে তালিম তালুকদার বাড়ি হয়ে আলতাব মাষ্টার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার খাল খননের কাজটি অসম্পূর্ণ এবং নিম্নমানের হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল জলাবদ্ধতা দূর করা এবং কৃষিকাজের জন্য পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণ করা, তবে বাস্তবে খাল খননের কাজ সঠিকভাবে হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খননকাজে অবহেলা এবং অর্থ আত্মসাতের কারণে খালটি যথাযথভাবে খনন করা হয়নি। খালের নির্ধারিত গভীরতা ও প্রশস্ততা অনেক জায়গায় ঠিকভাবে কাটা হয়নি, এবং খালের পাড়গুলো দুর্বলভাবে তৈরি করা হয়েছে। ফলে, বৃষ্টির মৌসুমে খাল ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খাল খননের কাজ অল্প কিছু অংশে করা হয়েছে, এবং বাকিটা আগের অবস্থায় রয়ে গেছে।
একজন স্থানীয় কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম খাল খননের পর জমিতে সেচ সুবিধা পাবো, কিন্তু এখনো আগের মতোই পানি সংকটে আছি। কাজ যদি ঠিকভাবে হতো, তাহলে আমাদের উপকার হতো।” আরেক স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজ হাওলাদার জানান, "যে পরিমাণ খনন কাজ হওয়ার কথা ছিল, তার অর্ধেকও হয়নি, অথচ পুরো অর্থ ব্যয়ের হিসাব দেখানো হবে।"
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে যে কিছু স্থানীয় বাসিন্দা থেকে অর্থ নেওয়ার পরও খননকাজ ঠিকমতো করা হয়নি এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও কর্মকর্তারা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তবে রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "খাল খনন শেষ হলে আমরা সার্ভেয়ার পাঠিয়ে মেপে নিবো। যদি মাটি কম কাটে, তাহলে সেই অনুযায়ী টাকা কম দেওয়া হবে।"
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, “আমরা অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে স্থানীয় জনগণ দাবি জানিয়েছেন, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে দ্রুত তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, অনিয়মের ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যেতে পারে।