প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:২৯
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে জালিয়াতির মাধ্যমে একই পদে দু’জনকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক মাদ্রাসা সুপারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ওই সুপারের নাম সাইদুর রহমান। তিনি উপজেলার ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার বিবরণ ও ভূক্তভোগীর নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সফিয়ার রহমান দীর্ঘ ২২ বছর যাবত কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারি পদে চাকরি করছেন। তিনি ২০০২ সালে সহকারি পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন (ইনডেক্স নম্বর-২৬৯২৩৩২)। সফিয়ার রহমান ২০১৪ সালের জুলাই মাসে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হন। সুপার জালিয়াতির মাধ্যমে ২০২৪ সালে আগস্ট মাসে অফিস সহকারি সফিয়ার রহমানকে এবতেদায়ি শাখার জুনিয়র শিক্ষক দেখিয়ে অফিস সহকারি পদ শূন্য দেখান।
অপরদিকে মাদ্রাসা সুপার অফিস সহকারি পদ শূন্য দেখিয়ে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সেই পদে মো. খালেদুজ্জামান নামের একজনকে নিয়োগ দেন। খালেদুজ্জামান ২০২৪ সালে মার্চ মাসে এমপিও ভুক্ত হন, যার ইনডেক্স নম্বর গ০০৫৪১৮০। খালেদুজ্জামানের জন্ম ১৯৭৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সেই হিসেবে তার বর্তমান বয়স ৪৬ পেরিয়ে গেছে যা এমপিও ভুক্তির শর্তের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার সুপার ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর মোস্তাফিজুর রহমান নামের একজনকে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগ বিধিতে নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক হলেও মোস্তাফিজুর রহমানের নিবন্ধন সনদ নেই। সুপার অর্থের বিনিময়ে একই নামের অন্য ব্যক্তির নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে মোস্তাফিজুর রহমানকে এমপিওভুক্ত করান, তার ইনডেক্স নম্বর (ঘ২১২১৭৮৩)।
এদিকে মাদরাসার কর্মচারী মজিবর রহমান গত ২০০০ সালের ৫ আগস্ট এম.এল.এস.এস পদে যোগদান করেন। তিনি ২০০১ সালে ২৫ অক্টোবর এমপিও ভুক্ত হন। জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্ম তারিখ ভুল থাকায় এমপিও কপিতে বেতন ভাতা আসলেও সুপার নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে একতরফা সিদ্ধান্তে গত প্রায় ৮ মাস থেকে বেতন স্থগিত করে রেখেছেন। এছাড়াও মজিবর রহমানের চাকরী জীবনের ২২ বছর অতিক্রান্ত হলেও সুপার উচ্চতর স্কেল পাওয়া থেকে তাকে বঞ্চিত রেখেছেন।
সফিয়ার রহমান প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া গত ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি কুড়িগ্রাম আমলী আদালতে সুপার সাইদুর রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ভূরুঙ্গামারী থানাকে এফ.আই.আর করতে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে মামলা এফআইআর ভূক্ত করে পুলিশ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মাদ্রাসা সুপারকে গ্রেপ্তার করে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ বলেন, প্রতারণার মামলায় কামাত আঙ্গারীয়া মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।