প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:৪২
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পাহাড়ের মানুষের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করতে ইক্ষু চাষ ও চিনা বাদামের উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না, বরং পাইওনিয়ার হতে হবে। এই দুটি ফসলের চাষ বাড়ালে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন আরও বেগবান হবে। সোমবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, রমজান সামনে রেখে কেউ যেন দ্রব্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রশাসনকে কঠোর নজর রাখতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা জরুরি, যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে জনসাধারণের ভোগান্তি না বাড়ায়।
সুপ্রদীপ চাকমা পরিবেশ রক্ষার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং তামাক চুল্লির প্রভাব কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সোমবার তিনি ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় ক্রীড়াবিদ ও খেলোয়াড়রা অংশ নেন। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে ক্রীড়া উন্নয়ন তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে সহায়ক হবে এবং তাদের সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করবে।
এরপর তিনি নবনির্মিত সদর উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম উদ্বোধন করেন। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন ও সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কংকন চাকমা, পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন অফিসাররা।
সভায় বক্তারা পার্বত্য অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষার প্রসার, কৃষি উন্নয়ন, ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। তারা পাহাড়ি জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নের তাগিদ দেন এবং স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পাহাড়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি ও ব্যবসায়িক খাতকে সম্প্রসারিত করতে হবে। সরকার যেসব উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে পার্বত্য এলাকায় দারিদ্র্য অনেকাংশে কমে আসবে।