প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৫৫
পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে মারমা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবিতে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সামনে জাগ্রত মারমা সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের মারমা প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ মারমা যুব ঐক্য পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ক্যরী মগের সঞ্চালনায় এবং কংচাইরী মাষ্টারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তারা পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার এবং সুষম অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন মারমা নেতৃবৃন্দ এবং মারমা মহিলা ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, মারমা জনগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রতিনিধিত্ব বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে উপেক্ষিত হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক বোর্ড, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, টাস্কফোর্সসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে মারমা প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি বৈষম্য এবং বঞ্চনার প্রমাণ বলে তারা মন্তব্য করেন।
তারা আরও বলেন, মারমা জনগোষ্ঠী শিক্ষা, সংস্কৃতি, এবং সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও মারমা সম্প্রদায়ের অবদান অনস্বীকার্য। অথচ তাদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব না থাকার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বক্তারা জানান, বৈষম্যমূলক এই পরিস্থিতি সমাধানে সরকারকে অবিলম্বে উদ্যোগ নিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহে মারমা প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আস্থার পরিবেশ তৈরি করা এবং পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তারা মনে করেন, ন্যায়বিচার এবং সমতা নিশ্চিত না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। পার্বত্য অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণে জাতিসংঘের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সকল জনগোষ্ঠীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে মারমা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলে বৈষম্য দূর হয়ে এ অঞ্চলের সামাজিক সম্প্রীতি আরও মজবুত হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিময় পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় পাহাড়ি জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা এবং ক্ষোভ আরও বাড়তে পারে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি ও উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।