প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:৩১
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতি এখন আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.৫৪ শতাংশ। যার কারণে মানুষ আজ বিপর্যস্ত।’
তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই সময়মতো খেতে পারত না, একটির বেশি পোশাক পরতে পারত না।
শীতের সময় শীতবস্ত্র ছিল না। পায়ে কোনো জুতা ছিল না। বেশির ভাগই কুঁড়েঘরে থাকত। সেই জায়গাগুলো তো বদলেছে। সেই বদলটা একা কেউ পারেনি। সবাই মিলেই আমরা করেছি। যেখানে রাষ্ট্র, বাজার, সামাজিক সংগঠন―সকলেরই অংশগ্রহণ ছিল।’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উপলক্ষে ‘শোভন কাজ ও সামাজিক সুরক্ষা : সকলের জন্য সমান মর্যাদা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনজিওদের সমন্বয়কারী সংগঠন এডাব এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের যৌথ আয়োজনে এই আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের সরকার চেয়েছে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেরা কিছু করুক। সেই সুযোগ না দিলে কাজটা সরকারকেই করতে হতো। সরকারের হাতে এত অর্থ কোথায়? তখন সরকার আপনাদের ওপর আরো কর আরোপ করত। এই করের টাকা দিয়ে সামাজিক সুরক্ষার নামে সরকার কিছু সুযোগ-সুবিধা করে দিত। আমার বিশ্বাস, শুধু সরকারি ব্যবস্থায় আজকের অবস্থান তৈরি হতো না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগেই বাংলাদেশের আজকে এই অবস্থান।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি শারমীন রিনভী বলেন, ‘আমরা পরিসংখ্যান ও অনুসন্ধানে দেখছি, আমাদের দারিদ্র্যের হার কমেছে। বাস্তবে কিন্তু তা হচ্ছে না। উন্নয়ন হয়েছে অবকাঠামোগত। সরকারি কর্মকর্তাদের সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বাজারে আরো প্রভাব পড়েছে। আমরা এখন তথ্য দিয়ে মিথ্যাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছি। কারণ তথ্য যারা বানাচ্ছে, তারা যদি সত্য না বলে তাহলে তথ্যও সত্য হয় না।’
সভাপতির বক্তব্যে এডাবের কোষাধ্যক্ষ মাসুদা ফারুক রত্না বলেন, ‘আমাদের মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। আমাদের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির কারণে সরকারি পর্যায়ে গবেষণা বিকশিত হচ্ছে না। শুধু এনজিওকর্মীরাই গবেষণা এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন করে বেসরকারি চাকরিজীবীদের ওপর কর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেটা দারিদ্র্য বিমোচনের অন্তরায়। আমাদের টেকসই উন্নয়নের দিকে এগোতে হবে।’
আলোচনাসভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডাবের কর্মসূচি পরিচালক কাউসার আলম কনক। এডাবের ভাইস চেয়ারপারসন মাজেদা শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এনামুল কবীর রূপম। সভা সঞ্চালনা করেন এডাবের পরিচালক এ কে এম জসীম উদ্দিন।