পার্বত্য এলাকায় শীতের শুরুতে সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
পার্বত্য এলাকায় শীতের শুরুতে সবজির বাজারে স্বস্তি

খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য এলাকায় সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। কয়েক মাস ধরে বাড়তি দামে থাকা শীতকালীন সবজির দাম নতুন বছরের শুরুতে অনেকটাই কমে এসেছে। এতে স্বস্তি পেয়েছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের ভোক্তারা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর পরিমাণে সবজি সরবরাহ থাকায় দাম তুলনামূলক কম। প্রতি কেজি বেগুন ২০-৩০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, পেঁপে ২০-৩০ টাকা, শালগম ২০-৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০-৩০ টাকা, লাউ ৩০-৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০-১০০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শসা, মিষ্টি কুমড়া ও ক্ষিরা ৩০-৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে করলা, পটল, ঝিঙা ও ধুন্দলের দাম কিছুটা বেশি, যা ৬০-৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে। গাজর ৪০-৬০ টাকা, টমেটো ৪০-৬০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লালশাক, পালং শাক, কলমি শাক ও কুমড়া শাকের আঁটি ১০-২০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।  


গত সপ্তাহেও যে আলু ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন ২৫-৩০ টাকায় নেমে এসেছে। দেশি পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা, ভারতীয় নতুন পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে রসুন ও আদার দাম এখনো চড়া। বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় পাইকারি দামে বিক্রি বেড়েছে। খাগড়াছড়ির বাজারে সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে টাটকা সবজি আসছে, যার ফলে দাম কমেছে। এভাবে দাম কম থাকার সম্ভাবনা আরও অন্তত দেড় মাস থাকবে।  


খাগড়াছড়ির সবজি বিক্রেতা বাপ্পি মিয়া জানান, পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন প্রচুর সবজি আসছে, যার কারণে দাম অনেকটা কমে গেছে। সবজি এখন অনেক টাটকা থাকায় বিক্রিও ভালো হচ্ছে। তবে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে দাম আবার বাড়তে পারে। ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে সবজি কিনতে পারছেন, যা তাদের জন্য স্বস্তির খবর।  


সবজির দাম কমলেও মাছ-মাংসের বাজারে এখনো স্বস্তি নেই বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। স্থানীয় ক্রেতা এমরান হোসেন মুন্না বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, সবজির দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। এখন কম টাকায় বেশি সবজি কেনা যাচ্ছে, তবে মাছ-মাংসের দাম এখনো সহনীয় নয়। সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পুরোপুরি কমবে না।  


বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমেছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট সবজির দাম তুলনামূলক বেশি রয়েছে। এর পেছনে জলবায়ু ও পরিবহন ব্যয় বড় কারণ হতে পারে। তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে।  


বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ভোক্তারা। তারা চান, সবজি, চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার কার্যকর উদ্যোগ নেবে। বিশেষ করে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত নজরদারি বাড়ানো জরুরি।  


সাধারণ মানুষ আশা করছেন, শুধুমাত্র সবজির বাজার নয়, অন্যান্য খাদ্যপণ্য ও মাছ-মাংসের দামও যেন সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, কয়েক মাসের মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এর জন্য সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।