ঠাকুরগাঁওয়ের বাজারে শীতকালীন আগাম সবজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৭ই নভেম্বর ২০২২ ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
ঠাকুরগাঁওয়ের বাজারে শীতকালীন আগাম সবজি

উত্তরাঞ্চলের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে শীতকালীন নানান আগাম সবজির দেখা মিলছে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। আর স্থানীয়দের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এসব সবজি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। আর ভোক্তারা পাচ্ছেন শীতের বিভিন্ন ধরণের আগাম সবজি।


জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, মাঠে-ঘাটে আগাম জাতের শীতকালীন সবজির ব্যাপক চাষ। আগাম সবজির মধ্যে বাজারজাত করা হচ্ছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, লাউ, করল্লা, পেঁপে, বোরবটি, সীমসহ বিভিন্ন জাতের শাক সবজি।


এসব সবজির মান ভালো হওয়ায় পাইকারি দরে কিনে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গতবার এমন সময় এক থেকে দুইটা করে সবজির গাড়ি লোড হতো আর এবার আগাম সবজির চাষ ও ফলন বেশি হওয়ায় দৈনিক ৪-৫টা করে সবজির গাড়ি লোড করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। এতে যেমন লাভবান হচ্ছেন কৃষক তেমনি তারাও বেশ লাভবান হচ্ছেন বলে জানান সবজি ব্যবসায়ী ওহায়েদ মুরাদ ও সুজন মিয়া।


মূলা চাষি আল-আমীন বলেন, এবার ফুলকপি, লাউসহ অন্যান্য সবজির দাম অনেক হলেও মূলার দাম নেই। মজুর দিয়ে জমি থেকে মূলা তুলতে মূলা বিক্রয় করে সেই মজুরের টাকায় হয় না। এখনো আমার ৫ একর জমির মূলা বিক্রি করতে পারিনি। এতে আমরা মূলা চাষিরা খুব হতাশায় আছি।


কৃষক হানিফ বলেন, বর্তমান সবজির যে বাজার দর, এমন দাম থাকলে লাভবান হওয়া যাবে। আমি দেড় বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছি। এতে প্রতি সপ্তাহে ১০-১৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রয় করছি। আশা করছি মৌসুম শেষে দেড় বিঘার বেগুনে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হবে।


কৃষক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, খুচরা বাজারে সবজির অনেক দাম সেই তুলনায় কৃষক পর্যায়ে তারা ন্যায্য ও কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। এবার আমাদের এই দিকে প্রচুর সবজির আবাদ হয়েছে ফলনও ভালো কিন্তু আমরা চাষিরা সেরকম দাম পাচ্ছিনা। এদিকে সার কীটনাশক ও মজুরির দাম অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়াও টাকা দিয়ে আমরা সার পাচ্ছিনা। সেই তুলনায় কৃষরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। বর্তমান সবজির বাজার অনুযায়ী খরচ ও ফলনের দাম সমান সমান হয়ে যাচ্ছে। তাই দামটা যদি আরও একটু বেশি পেতাম তাহলে কৃষকরা লাভবান হতে পারতাম।


সদর উপজেলার নারগুণ কহরপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র সবজি চাষি আব্দুল মালেক বলেন, পালং শাক শুধু ৭ কাঠা জমিতে করেছি। খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। ৩ কাঠা জমির শাক কেটে বিক্রি করেছি সাড়ে ৬ হাজার টাকা। আরও বাকি যেটা শাক আছে সেটা বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। আর যদি এর থেকে দাম বেশি হয় তাহলে আশা করছি ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রয় হবে।


জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, সবজি চাষে সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আগাম সবজি চাষে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন বলে আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। আশাকরি আবহাওয়া ভালো থাকায় সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। এবার সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমি। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে এক হাজার ৬৩৭ হেক্টর জমি।