সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা গুলশান লিংক রোড অবরোধ করেছে, যার ফলে ওই সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করে আন্দোলন শুরু করে। কলেজের মূল ফটকের সামনে টানা ছয় দিন ধরে ছয় শিক্ষার্থী অনশন করছে, তাদের সামনে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছে। তবে ঘটনাস্থলে এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে এবং ধাপে ধাপে আরও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধের পরিকল্পনা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স এবং রোগীবাহী যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়িকে সড়ক অতিক্রম করতে দেওয়া হচ্ছে না। রবিবার রাতেই শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছিল যে, সোমবার সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তারা টানা অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে। এর আওতায় গুলশান লিংক রোড, মহাখালী, রেল গেট ও আমতলী মোড় থাকবে।
তিতুমীর ঐক্যের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান মুক্তার অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্র শিক্ষার্থীদের দাবিকে উপেক্ষা করছে এবং বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাস্তবায়ন করছে না। তিনি বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আন্দোলনে নেমেছি, কিন্তু আমাদের কর্মসূচি নিয়ে অনেকেই বিরক্ত হচ্ছেন। আমরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে আমাদের দাবির বিষয়ে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।"
তিনি তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে: সরকারি স্বীকৃতিসহ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করা, উচ্চশিক্ষার মান উন্নত করা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করার ঘটনার তদন্ত করা।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিতে তারা বিক্ষোভ, রেলপথ ও সড়ক অবরোধ, ক্লাস বর্জন, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করলেও এখনো কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
গত ২৯ জানুয়ারি বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনসহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় তাদের বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে এবং এখন তারা পর্যায়ক্রমে প্রধান প্রধান সড়ক অবরোধের কৌশল নিয়েছে।
অবরোধ চলাকালে সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে পড়লেও শিক্ষার্থীরা বলছে, এই দাবি কেবল তাদের নয়, এটি উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রশাসন দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।