বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: রবিবার ২রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটেছে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। রোববার সকাল ৯টা ১১ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা ৩৫ মিনিটে শেষ হওয়া মোনাজাতে লাখো মুসল্লি অংশ নেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের সাহেব, যার মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি ও কল্যাণের প্রার্থনা করা হয়।  


মোনাজাতের সময় ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। অংশগ্রহণকারীরা দু’হাত তুলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় দোয়া করেন। ইহকাল ও পরকালের নাজাত কামনার পাশাপাশি গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান তারা।  


আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিরা নিজেদের আত্মশুদ্ধি, দুনিয়ার সকল বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ দোয়া করেন। অনেক মুসল্লি দূর-দূরান্ত থেকে আসা আপনজনদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।  


মোনাজাতের আগে বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমানের হেদায়েতি বয়ান অনুষ্ঠিত হয়। এই বয়ানে যারা ইজতেমা শেষে চিল্লায় যাবেন, তাদের জন্য আমল ও দাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। মাওলানা আব্দুল মতিন তাৎক্ষণিকভাবে এই বয়ান বাংলায় অনুবাদ করেন।  


এরপর ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা নসিহতমূলক বক্তব্য দেন। এতে মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্য, ঈমান মজবুত রাখা ও ইসলামের দাওয়াত ছড়িয়ে দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। মাওলানা জুবায়ের তার বক্তব্য বাংলায় অনুবাদ করেন, যা মুসল্লিদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।  


বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের এই আখেরি মোনাজাতে দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নেন। অনেকেই আগের রাতেই স্থান দখল করতে মাঠে চলে আসেন। আকাশে হেলিকপ্টার থেকেও ইজতেমার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো এলাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।  


মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা ধীরে ধীরে ইজতেমা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করতে থাকেন। অনেকেই ইজতেমা শেষে নতুন দাওয়াতি জামাতে যোগ দিতে বিভিন্ন স্থানে রওনা হন। যেসব মুসল্লি ফিরে যাচ্ছেন, তারা নিজ নিজ এলাকায় ইসলামের দাওয়াত ও আমল চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।  


প্রথম পর্বের সমাপ্তির পর, আগামী সপ্তাহে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। এতে আরও বেশি মুসল্লির সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বেও ধর্মীয় আলোচনাসহ আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে, যা বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য এক মহামিলন হিসেবে কাজ করবে।