ঝিনাইদহে প্রবাসীর স্ত্রী সোনিয়া খাতুনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিবি পুলিশকে। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মুক্তার শেখ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের শৈলকুপা আমলী আদালতের বিচারক ফারুক আযম মামলাটি গ্রহণ করেন। মামলার বাদী মুক্তার হোসেন, যিনি সোনিয়ার মামা শ্বশুর, আদালতে অভিযোগ করেন যে মুক্তার শেখ সোনিয়াকে হত্যার সঙ্গে জড়িত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শৈলকুপার আবাইপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী সোনিয়া দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামে থাকতেন। চিকিৎসার অজুহাতে প্রায়ই তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন লক্ষণদিয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মুক্তার শেখ। এই যাতায়াতের ফলে তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গ্রামবাসীরা তাদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে এবং মুক্তার শেখকে তাড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে মুক্তার শেখ ঝিনাইদহ শহরের কালিকাপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে দেন সোনিয়ার জন্য। সেখানে তারা একসঙ্গে সময় কাটাতেন। গত ১৮ জানুয়ারি শনিবার রাতে মুক্তার শেখ সোনিয়ার বাসায় যান। ভোরে সোনিয়ার সন্তানরা তাকে রুমের মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এবং প্রতিবেশীদের খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
মামলার বাদী মুক্তার হোসেনের অভিযোগ, মুক্তার শেখ ঘটনার রাতে বাসায় ছিলেন এবং সোনিয়াকে হত্যার পর পালিয়ে যান। বাদীর সন্দেহ, সোনিয়া পরকীয়া সম্পর্ক রাখায় অস্বীকৃতি জানালে মুক্তার ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যা করেন এবং লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান।
পল্লী চিকিৎসক মুক্তার শেখের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মুক্তার শেখকে প্রধান আসামি করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বাদী পক্ষের আইনজীবী আমিনুর ইসলাম জানান, মামলাটি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয়রা জানান, সোনিয়ার এই রহস্যজনক মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামবাসীরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডিবি পুলিশের তদন্তের পর সত্য উদঘাটিত হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহের এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সোনিয়ার দুই সন্তান এখন তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে রয়েছে। এদিকে, পল্লী চিকিৎসক মুক্তার শেখের খোঁজে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা না হওয়া পর্যন্ত এই মামলার বিচারকাজ স্থগিত থাকবে। তবে এই ঘটনায় এলাকাবাসী সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।