সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি রফিকুল ইসলাম (৩৭) এর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রবাসে মৃত সন্তানের লাশের জন্য মায়ের বিলাপ আর আহজারিতে এলাকায় বিরাজ করছে শোকের ছায়া। প্রিয়জনকে হারিয়ে নির্বাক ও দিশেহারা তার স্ত্রী । পরিবারের অন্য সদস্যরা বিষন্ন। রফিকুল ছিল তাদের পরিবারে একমাত্র আয়ের উৎস। তার মৃত্যুতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রফিকুলের দুই শিশু সন্তানের ভবিষ্যত।
নিহত রফিকুল ইসলাম সৌদি আরবের ইসোইয়া শহরের একটি মাদ্রাসা ও মসজিদের ক্লিনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় গত ৩১ জুলাই কাজ থেকে বাসস্থানে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় তাকে উদ্ধার করে সে দেশের স্থানীয় তাবারজল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে রফিকুলের লাশ ওই হাসপাতালের হিমঘরে সংরক্ষিত আছে।
নিহত রফিকুল ইসলাম জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তার ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলের বয়স ১৮ বছর, কোরআনে হাফেজ। মেয়ের বয়স মাত্র ৬ মাস। তার এ অকাল মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছে গোটা পরিবার। পরিবারের একমাত্র শক্তিকে হারিয়ে সবাই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে নিহত রফিকুলের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের স্ত্রী ও মা আহাজারি করছেন। ওই পরিবারের অন্য সদস্যরাও শোকাহত। রফিকুলের নিহত হওয়ার খবরে তার বাড়িতে এসে ভিড় করেছেন পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা।
নিহতের মা মহছিনা বেগম জানান,বাড়ীর কিছু জমি বন্ধক ও কয়েকটি গরু বিক্রয়ের টাকায় ২০২২ সালের ২১ শে আগস্ট মাসে তার ছেলে সৌদি আরবে যান। এক বছর না যেতেই তারা পায় এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার খবর। লাশ কবে আসবে দেশে এই অপেক্ষায় অনিদ্রায় কাটছে প্রিয়জনদের প্রতিটিক্ষণ।
নিহতের ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাশ বাংলাদেশে আনার জন্য চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে সৌদিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
স্থানীয় আয়মারসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মিল্টন জানান,আমি তার মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাটি সতিই বেদনাদায়ক। তার লাশ দেশে আনার জন্য পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করছি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।