বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ জাহাজ ঘাটে ২৬ ঘণ্টা অপেক্ষার পর অবশেষে সেন্টমার্টিনের পথে রওনা হয়েছে পর্যটকরবাহী জাহাজগুলো। মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে যাত্রা শুরু করে কেয়ারি অ্যান্ড ক্রুজ জাহাজ। এর পরপরই অন্য জাহাজগুলো সেন্টমার্টিনের পথে যাত্রা করে। তবে সাতটি জাহাজের পরিবর্তে ছয়টি জাহাজ মঙ্গলবার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট ছেড়েছে। অন্যদিন সকাল সাড়ে ৯টায় জাহাজ ছাড়লেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাহাজ ছাড়ল।
জাহাজ সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটকবাহী সাতটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। টেকনাফের নতুন জেটি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছার পর হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে জাহাজগুলো আটকে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় টেকনাফে ফেরত আসে জাহাজগুলো। এতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পর্যটকের সেন্টমার্টিন যাওয়া হয়নি। এসব পর্যটকরা ঘাটের আশেপাশে ও টেকনাফ শহরে রাত কাটান। অবশেষে ২৬ ঘণ্টা পর সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তারা।
এমভি ফারহান জাহাজ ছাড়া এমভি গ্রিনলাইন-১, এমভি আটলান্টিক ক্রুজ, বে-ক্রুজ, কেয়ারি ক্রুজ, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও এলসিটি কাজল পর্যটকদের নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে আজ যাত্রা করে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের পরির্দশক (পরিবহন) মো. হোসেন বলেন, সোমবার সকালে পর্যটকটদের নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে জাহাজগুলো ছাড়ে। এরপর হঠাৎ করে বৈরী আবহাওয়া শুরু হওয়ায় জাহাজগুলোকে নাফ নদের মাঝপথ থেকে ফেরত আনা হয়। আবহাওয়া অধিদফতরের কক্সবাজার অফিসের আবহাওয়াবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকালে আচমকা ধমকা হওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল ছিল। এখন পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক রয়েছে।
পর্যটকবাহী কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজের ব্যবস্থাপক শাহ আলম জানান, গতকাল যেতে না পারলেও ধারণক্ষমতা অনুযায়ী পর্যটকদের নিয়ে তাদের জাহাজ দুটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে আজ রওনা হয়েছে। বে-ক্রুজের পরিচালক আবুল কালাম জানান, দেরিতে হলেও জাহাজগুলো পর্যটকদের নিয়ে দমদমিয়া ঘাট ছেড়ে গেছে। এদিকে একদিন বৈরী আবহওয়া কারণে সেন্টমার্টিনে জাহাজ না যাওয়াতে সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছেন কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সোমবার টেকনাফ থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে আসতে না পারায় দ্বীপে আটকা পড়েছেন তারা। পর্যটকদের বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছে স্থানীয় প্রশাসন।
পর্যটকদের আটকা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, দ্বীপে ভ্রমণে এসে আড়াই হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন। তাদের বেশির ভাগেরই সোমবার দ্বীপ থেকে টেকনাফে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ দ্বীপে আসতে পারেনি। সকাল থেকে জেটি ঘাটে জাহাজের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন অনেক পর্যটক। টেকনাফ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল হাসান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজগুলো সোমবার ফেরত আনা হয়। আজ আবহওয়া পর্যবেক্ষণ করে বেলা ১১টা ৪৫মিনিটের দিকে জাহাজ ছাড়ার অনুমতি দেয়া হয়।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।