রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জমিতে কৃষকের চোখের সামনে পচে নষ্ট হচ্ছে টমেটো। বাজারে দাম নেই, তাই টমেটো তুলতে চাইছেন না চাষিরা। পাকা টমেটো মাঠেই পড়ে থাকছে, শালিকসহ বিভিন্ন পাখি ঠুকরে খাচ্ছে, অনেক গাছে টমেটো শুকিয়ে যাচ্ছে। কিছু কৃষক বাধ্য হয়ে আড়তে পাঠাচ্ছেন, কিন্তু আড়তদাররাও বেশি টমেটো আনতে নিষেধ করছেন। ফলে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন চাষিরা।
চরকর্নেশন এলাকার চাষি হারুন শেখ জানান, চার বিঘা জমিতে টমেটো চাষে এক লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে, অথচ এখন পর্যন্ত মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পেরেছেন। দিন দিন দাম কমছে, তাই মাঠেই ফেলে রাখতে হচ্ছে। কোবাদ আলি নামে আরেক চাষি জানান, সাত বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত দেড় লাখ টাকারও বিক্রি হয়নি। আড়তে প্রতি কেজি টমেটো চার থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, অথচ টমেটো তোলার খরচও উঠছে না।
চাষিরা জানান, দিপালী ও বাহুবলী জাতের টমেটো চাষে প্রচুর খরচ হয়, কিন্তু এ বছর ফলন ভালো হলেও লাভ নেই। মোবারক সরদার নামে এক কৃষক বলেন, পুরো পুঁজি শেষ হয়ে গেছে, এখন নতুন করে অন্য ফসলের চাষ করার মতো সামর্থ্য নেই। জমি খালি পড়ে আছে, কিন্তু শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ চালানোর মতো অবস্থাও নেই।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান জানান, চলতি অর্থবছরে উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে, ফলে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
টমেটোর এমন দরপতনে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। সরকারি সহায়তা কিংবা কৃষিপণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলে ভবিষ্যতে অনেকেই টমেটো চাষ থেকে সরে আসতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।