বাংলাদেশের দুর্নীতি সূচকে অবনতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৩২ অপরাহ্ন
বাংলাদেশের দুর্নীতি সূচকে অবনতি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্কোর কমে ২৩ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় এক পয়েন্ট কম। এবার দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশ কঙ্গো ও ইরানের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে। মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।  


সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির উপদেষ্টা অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৪ এবং অবস্থান ছিল ১০ম, কিন্তু এবছর পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যা উদ্বেগজনক।  


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও খারাপ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্নীতির লাগাম টানতে না পারলে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন ব্যাহত হবে। তাই সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হবে।  


দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ দুর্নীতির দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ভুটান, যার স্কোর ৬৮। অন্যদিকে, ভারতের স্কোর ৩৯, পাকিস্তানের ২৮ এবং শ্রীলঙ্কার ৩৬। বাংলাদেশের চেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে আফগানিস্তান, যার স্কোর ২০।  


বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিশ্চিত করা না গেলে দুর্নীতির এই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। সরকারি সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে দুর্নীতি দমন কার্যক্রম তেমন সফল হবে না।  


টিআইবির প্রতিবেদনে সরকারি কেনাকাটা, আর্থিক খাত, রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলতে হলে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।  


দুর্নীতি কমানোর জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ এবং স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।  


টিআইবি সুপারিশ করেছে, সরকারি ও বেসরকারি খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে দুর্নীতিবিরোধী আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়। তাই নীতিনির্ধারকদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।