রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি-শেরপুর
প্রকাশিত: বুধবার ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:০১ অপরাহ্ন
রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন

শেরপুরে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে জাকারিয়া বাদল নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত আরও দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  


নিহত জাকারিয়া বাদল সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস ছিলেন। স্থানীয় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে তার সঙ্গে কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানের বিরোধ চলছিল। এছাড়া বাদলের সঙ্গে স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলমের রাজনৈতিক শত্রুতা ছিল।  


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা বিএনপির বিভক্ত দুটি পক্ষের সমর্থন পাওয়া নিয়ে বাদল ও লুৎফরের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এর মধ্যে লুৎফর রহমান কারাগারে থাকা নুরে আলমের সঙ্গে দেখা করে স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার ও আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে পরিকল্পনা করেন।  


মঙ্গলবার বিকেলে বাদল, সোহাগ আলম ও রুহুল আমিন মোটরসাইকেলে ভীমগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বাদলসহ তিনজনকে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে বাদল ও সোহাগকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।  


সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে বাদলকে ঢাকায় নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রাত সাড়ে ১২টার দিকে পথেই তার মৃত্যু হয়। আহত সোহাগ ও রুহুল আমিন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অবস্থাও গুরুতর বলে জানা গেছে।  


নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। রাজনৈতিক আধিপত্য ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে বাদলকে হত্যা করা হয়েছে। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।  


তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, বাদল তার দলেরই নেতা ছিলেন, তাই তিনি কেন তার ওপর হামলা চালাবেন। তার দাবি, বাদলের অনেক শত্রু রয়েছে এবং তাদের কেউ এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।  


এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর রয়েছে।