রাস্তার পাশে ফুটফুটে শিশুকে ফেলে চলে গেলেন গর্ভধারিনী মা

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, নিজস্ব প্রতিনিধি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ৭ই মার্চ ২০২৫ ১২:৩৪ অপরাহ্ন
রাস্তার পাশে ফুটফুটে শিশুকে ফেলে চলে গেলেন গর্ভধারিনী মা

দিনাজপুরের বিরামপুরে একটি ফুটফুটে শিশুকে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিরামপুর পৌরশহরের মাহমুদপুর মুন্সিপাড়া এলাকায় শিশুটিকে পাওয়া যায়। শিশুটির বয়স আনুমানিক দেড় থেকে দুই বছর। স্থানীয়রা জানান, শিশুটিকে একটি ঢাকা পান স্টোরের পাশে ফেলে রেখে যায় এক মহিলা। ধারণা করা হচ্ছে, ওই মহিলাই শিশুটির মা। শিশুটি বর্তমানে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মমতাজুল হক।


স্থানীয়দের মতে, আঠারো থেকে বিশ বছর বয়সী এক তরুণী শিশুটিকে ফেলে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে সে জানায়, ছয় দিন আগে বিরামপুর স্টেশনে শিশুটিকে কুড়িয়ে পেয়েছে। তার নিজেরও সন্তান রয়েছে এবং আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শিশুটিকে লালন-পালন করতে পারছে না। সে শিশুটিকে থানায় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রহণ করেনি। তরুণীটি আরও জানায়, তার বাড়ি আদর্শ স্কুল পাড়ার পাশে।


এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী মাইদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে একজন অটোরিকশা চালক তার দোকানের সামনে এসে জানায়, একটি মেয়ে শিশুকে বাগানে ফেলে রেখে এক মহিলা তার অটোরিকশায় চড়তে চেয়েছিল। চালকের সন্দেহ হওয়ায় সে তাকে নেয়নি। পরে মেয়েটি জানায়, শিশুটিকে সে কুড়িয়ে পেয়েছে। শিশুটিকে এতিমখানা বা মাদ্রাসায় দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলে সে শিশুটিকে নিয়ে চলে যায়।


স্থানীয় শান্ত নামে এক যুবক বলেন, দুপুরে তাদের দোকানের পাশে শিশুটিকে দেখে তিনি মনে করেছিলেন, কেউ শিশুটিকে রেখে ওয়াশরুমে গেছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারেন, শিশুটিকে ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর শিশুটির মায়ের সন্ধানে এলাকাবাসী খোঁজাখুঁজি শুরু করে। ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক মানুষের ভিড় জমে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।


বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মমতাজুল হক বলেন, তিনি রংপুরে একটি মিটিংয়ে থাকলেও ফোনে বিষয়টি জানতে পেরেছেন। শিশুটি বর্তমানে থানার হেফাজতে রয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল জানান, শিশুটিকে রাজশাহীর ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হবে। সেখান থেকে তার পরিবার উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে শিশুটিকে ফেরত নিতে পারবেন। এই ঘটনায় এলাকাবাসী শিশুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।