ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মানবপাচার চক্রের মূলহোতা তামান্না জেরিনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তিনি বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় মানবপাচারের মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার নেপালে পালানোর চেষ্টার সময় তাকে আটক করা হয়।
সিআইডি জানিয়েছে, তামান্না জেরিনের নামে বনানী থানায় মামলা রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লোকজনকে রাশিয়ায় পাঠাতেন এবং সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাধ্য করা হতো। সম্প্রতি নাটোরের সিংড়ার বাসিন্দা হুমায়ুন কবির নামে একজন এ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। তার দুলাভাই রহমত আলী দেশে ফিরতে চাইলেও এখনো বন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার ড্রিম হোম ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের মাধ্যমে তারা রাশিয়া যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়। ২৩ জানুয়ারি ড্রোন হামলায় হুমায়ুন কবির নিহত হন এবং ২৬ জানুয়ারি তার মৃত্যুর খবর আসে পরিবারে।
এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় এবং নজরদারি বাড়ায়। তদন্তে উঠে আসে, এই চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন তামান্না জেরিন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
সিআইডি আরও জানিয়েছে, তামান্না জেরিন দালালের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিতেন। ভুক্তভোগীরা জমি ও স্বর্ণালংকার বিক্রি করে এবং ঋণ নিয়ে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন। তবে সেখানে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন তারা।
মানবপাচারের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদেরও খুঁজে বের করা হবে এবং মানবপাচার প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মসংস্থানের নামে প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোতে চাকরির প্রলোভনে মানুষ পাচারের ঘটনা উদ্বেগজনক। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি কঠোর নজরদারি না থাকলে এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।