টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে এবার বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন বেড়েছে এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা দারুণ খুশি। প্রতি বিঘায় ১০-১২ মণ বাদাম উৎপাদিত হয়েছে, যা আড়াই হাজার থেকে চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে চাষিরা বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ করছেন, যা আগের বছরের তুলনায় বেশি।
প্রতি বছর বন্যার পর যমুনার বুকে জেগে ওঠা বালুচরে বাদামের চাষ করেন স্থানীয় কৃষকেরা। অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে এবারও বাদামের আবাদ হয়েছে। কৃষকেরা ইতোমধ্যে বাদাম সংগ্রহ শুরু করেছেন এবং স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করছেন।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এবার যমুনার চরাঞ্চলে ১ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে, যেখানে ৩ হাজার ১৩১ মেট্রিকটন বাদাম উৎপাদিত হয়েছে। বাজার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রণোদনার কারণে ফলন ও লাভ দুটোই বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গাবসারা ইউনিয়নের চাষি ফরিদুল ইসলাম, ইদ্রিস আলী ও তুলা মিয়া জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে বাদামের চাহিদা বেশি থাকায় ভালো দাম পাচ্ছেন। তারা আগামীতে আরও বেশি জমিতে বাদাম চাষের পরিকল্পনা করছেন, কারণ লাভজনক ফসল হিসেবে এটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
চাষিরা আরও জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তারা উন্নতমানের বাদাম বীজ ও সার বিনামূল্যে পেয়েছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, যা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে চাষ করা সম্ভব হবে বলে তারা মনে করেন।
গোবিন্দাসী হাটের মহাজন ইব্রাহিম ও আলামিন জানান, বাদামের চাহিদা বেশি থাকায় তুলনামূলক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে তারা প্রতি মণ বাদাম আড়াই হাজার থেকে চার হাজার টাকায় ক্রয় করছেন। ক্রেতারাও খুচরা বাজারে বাদামের ভালো মান এবং দাম নিয়ে সন্তুষ্ট।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, যমুনার চরাঞ্চলের মাটি বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ বছরও বাম্পার ফলন হয়েছে এবং চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। সরকারের কৃষি সহায়তা ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো গেলে ভবিষ্যতে বাদামের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
স্থানীয় কৃষকেরা আশা করছেন, সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলে বাদাম চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে। এদিকে, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।