বাংলাদেশের ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকলেও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১লা অক্টোবর ২০২৪ ০৪:১৩ অপরাহ্ন
বাংলাদেশের ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকলেও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নেই

সম্প্রতি বাংলাদেশের ইলিশ মাছ পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করলেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে তেমন উচ্ছ্বাস নেই। বিশেষ করে উত্তর পূর্ব ভারতের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ৫ আগস্ট থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্ত বাণিজ্য প্রায় বন্ধ ছিল। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাণিজ্য শুরু হলেও, এখনো দৈনিক ১০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হচ্ছে তাদের।


স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানির ওপর। ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশে ১৩টি স্থলবন্দর এবং ৪টি নদীবন্দর রয়েছে, যা বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে গত দুই মাসে বিপুল ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে।


ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের গুয়াহাটি শাখার সাধারণ সম্পাদক অমরেশ রায় জানান, "বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক কারণে গা ঢাকা দিয়ে আছেন এবং ব্যাংকগুলোর নতুন নিয়মের কারণে লেনদেন হচ্ছে না।" আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ে টাকার আদান-প্রদান হয় ডলারের মাধ্যমে, কিন্তু ব্যাংকগুলোর সীমাবদ্ধতার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।


বাংলাদেশের ব্যবসায়ী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, "যেসব ব্যাংক আগে এলসি দিত, তাদের এখন আর সেই অনুমতি নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা ভয়ে আত্মগোপন করে আছেন।" তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


আগতলার ব্যবসায়ী শংকর রায় জানান, "ভারত থেকে চাল, পেঁয়াজসহ কিছু সামগ্রী বাংলাদেশে যাচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে প্রায় কিছুই আসছে না।" তিনি আরও বলেন, "স্থায়ী সরকার এলে আলোচনা করে সমাধান সূত্র বের করা যেতে পারে, কিন্তু তা কবে হবে, তা জানি না।"


অন্যদিকে, সীমান্তে ট্রাক মালিক ফয়জুল আহমেদ জানান, তার অন্তত ১২টি ট্রাক গত ৫ আগস্ট থেকে সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছে। "এভাবে আর বেশিদিন চালানো সম্ভব নয়," বলেন তিনি। এ ছাড়া, সুতারকান্দি এলাকায় প্রায় ৩০০ দিনমজুরও বর্তমানে কাজের অভাবে বিপর্যস্ত।


বাংলাদেশের অতিরিক্ত হাই কমিশনারের কার্যালয় জানিয়েছে, "৫ আগস্ট থেকে দুই দেশের ব্যবসায় খানিকটা ভাটা পড়েছে তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলাসম্ভব নয়।" তবে বাংলাদেশের সরকার এই বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা নিয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। 


সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতি দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে এবং এর সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।