মুশফিক-সাইফের নৈপুণ্যে বরিশালের জয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২০ অপরাহ্ন
মুশফিক-সাইফের নৈপুণ্যে বরিশালের জয়

২০১৮ সালের বিপিএলে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ডেথ ওভারে বোলিং করতে গিয়ে সাইফউদ্দিন বেদম পিটুনি খেয়েছিলেন ড্যারেন সামির ব্যাটে। চারটি ছক্কা ও একটি চার দিয়ে বিব্রতকর এক রেকর্ড গড়েছিলেন বাংলাদেশি বোলার। এছাড়া ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ডেভিড মিলারের হাতে ডেথ ওভারে ৫ ছক্কা খাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে তার। কিন্তু সেসব এখন অতীত। শনিবার তার দারুণ বোলিংয়ে বেনি হাওয়েল সামি কিংবা মিলার হতে পারেননি। শেষ ওভারে সাইফউদ্দিনের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ফরচুন বরিশালের কাছে হার মানে সিলেট স্ট্রাইকার্স।


শনিবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুশফিকের ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরিতে বরিশাল ১৮৪ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায়। জবাবে খেলতে নেমে কাইল মায়ার্সের বোলিং তোপে ৪০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বড় হারের শঙ্কায় ছিল সিলেট। কিন্তু সেখান থেকে নাটকীয় এক জুটি গড়েন আরিফুল ইসলাম ও হাওয়েল। বিপিএলের ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে ৫২ বলে রেকর্ড ১০৮ রানের জুটি গড়েন তারা। শেষ দুই ওভারে সিলেটের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪৪ রানের। ১৯তম ওভারে ওবেড ম্যাককয় আরিফুলকে ফিরিয়ে সাফল্য পেলেও ২১ রান খরচ করে ফেলেন তিনি। আরিফুল ৩১ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন।


ফলে শেষ ওভারে সিলেটের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৩ রান, ক্রিজে হাওয়েল। কিন্তু সাইফউদ্দিনের প্রথম বলে এগিয়ে খেলতে গিয়ে বল মিস করেন। দ্বিতীয় বলটি ছিলো স্লো বাউন্সার। এই ফাঁদে পা দিয়ে প্রীতম কুমারের ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৩২ বলে ৫৩ রান করে তার আউটে সিলেটের জয়ের আশা ক্ষীণ হয়ে যায়।


তবে সাইফউদ্দিনের ডেথ ওভারে খেই হারনোর বহু উদহারণ আছে। শেষ চার বলে তিনি কী করেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে পুরোনো ভুলগুলো শুধরে সাইফউদ্দিন এখন পরিণত। শেষ চার বলে চারটি সিঙ্গেল দিয়ে বরিশালকে ১৮ রানের দারুণ এক জয় এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এই অলরাউন্ডার। ইনজুরি কাটিয়ে ৯ মাস পরে ফিরে ব্যাটিং-বোলিংয়ে দারুণ খেলেছেন তিনি।


বরিশালের বোলারদের মধ্যে মায়ার্স ১২ রানে তিনটি উইকেট নিয়ে সিলেটের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। এর আগে ব্যাট হাতে চট্টগ্রামে ঝড় তুলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা। এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনিই। এছাড়া সাইফ, ম্যাককয়, মহারাজ ও মিরাজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।


টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৩ রানে ভাঙে বরিশালের উদ্বোধনী জুটি। আহমেদ শেহজাদ (১৭) ফিরে যাওয়ার পর তামিম (১৯) ও সৌম্য (৮) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মুশফিক ও মায়ার্স। চতুর্থ উইকেটে দুজন মিলে ৪৮ বলে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। চট্টগ্রামের ২২ গজেই স্বপ্নের মতো এক টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মায়ার্সের। সেই মাঠেই এবার বিপিএল অভিষেকটা রাঙিয়েছেন তিনি। ২ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন। ৩১ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন মায়ার্স।


তবে মুশফিক পেয়েছেন ঝড়ো এক হাফ সেঞ্চুরি। হাফ সেঞ্চুরি করার পর ৫২ রান তুলে রান আউটের শিকার হন এই ব্যাটার। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ১২ এবং মিরাজের ১৫ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে বরিশাল ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে।


সিলেটের বোলারদের মধ্যে তানজিম হাসান সাকিব ৪৮ রানে তিনটি উইকেট শিকার করেন। শফিকুর ইসলাম ও হ্যারি টেক্টর নেন একটি করে উইকেট।


শনিবার বরিশালের কাছে হেরে প্লে-অফ খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে সিলেটের। ১০ ম্যাচে ৩ জয়ে তাদের পয়েন্ট ৬, অবস্থান টেবিলের ছয় নম্বরে। অন্যদিকে বরিশালের প্লে অফ অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তামিম ইকবালদের অবস্থান তিন নম্বরে।