১৬ ঘন্টা পর নদীতে ডুবে যাওয়া পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক উদ্ধার করলো হামজা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ৮ই মার্চ ২০২৩ ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
১৬ ঘন্টা পর নদীতে ডুবে যাওয়া পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক উদ্ধার করলো হামজা

রাজবাড়ীর গোয়লন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরি ঘাটে পেঁয়াজ ও রসুন বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে ডুবে যায়। এতে ট্রাকে থাকা চালক আহত হয়েছেন। তিনি এখন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান তিনি এখন সুস্থ আছেন।


সোমবার (৬ মার্চ) রাত ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ৭নম্বর ফেরিঘাটে এ দূর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ'র উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা দৌলতদিয়া ঘাটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ট্রাকটি পেঁয়াজ নিয়ে ময়মনসিংহের জামালপুরে যাচ্ছিলেন। ট্রাকটির নাম্বার ঢাকা মেট্রো ঢ-১৪-৮৮৫৩।


ট্রাকের সহযোগী (হেলপার) পল্লব দাস বলেন, আমরা ফরিদপুর সালথা এলাকা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পেঁয়াজ ও রসুন বোঝাই করে রওনা দিয়ে রাত ৯টার একটু আগে দৌলতদিয়া ৭নম্বর ফেরি ঘাটে এসে পৌছাই। ঘাটে এসে ট্রাকের ব্রেকের হাওয়া কম থাকায় আমার ওস্তাদ হাওয়া উঠায়। আমি এইফাঁকে ট্রাক থেকে নেমে দোকান থেকে কিছু খাওয়ার জন্য যাই। পরে আমার ওস্তাদ হাওয়া উঠিয়ে ট্রাক নিয়ে ফেরিতে উঠতে গেলে ঢালু নামার সময় আর ব্রেকে কাজ করেনি। পরে ট্রাকটি সোজা পন্টুনের ওপর দিয়ে নদীতে পড়ে তলিয়ে যায়। ট্রাকটি তলিয়ে যাবার দুই মিনিট পরে আমার ওস্তাদ পানির নিচ থেকে ট্রাকের দরজা খুলে বেরিয়ে উপরে উঠে আসে। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি আরো বলেন, একমাত্র আল্লাহ আমাদের নিজ হাতে বাঁচিয়েছে।


পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি রাত ২টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে একটি ফোন পাই যে আমি যে ট্রাকে পেঁয়াজ পাঠিয়েছিলাম সেটা ফেরিতে উঠতে গিয়ে নদীতে পড়ে গেছে। তৎক্ষনাৎ রাতেই আমি সালথা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে চলে আসি। পরে ঘাটে এসে নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ'র সাথে যোগাযোগ করলে তারা সকালে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। তিনি বলেন, গাড়িতে ১২ টন পেঁয়াজ ও অল্প কিছু রসুন ছিলো। আমার সর্বমোট সাড়ে তিন লক্ষ্য টাকার পেঁয়াজ রসুন ছিলো। অল্প কিছু পেঁয়াজ নদীতে ভেঁসে গেছে। বাকিগুলো ট্রাকের রশিতে আটকে থাকে। আমি ধারনা করছি ২ লক্ষ্য টাকার মতো আমার ক্ষতি হয়েছে।


বিআইডব্লিউটিএ'র আরিচা শাখার যুগ্ন পরিচালক এবং উদ্ধারকারী জাহাজ 'হামজার' কমান্ডার এসএম আজগর আলি বলেন, আমরা খবর পেয়েই সকালে আরিচা থেকে রওনা দিয়ে সকাল ১০ টার দিকে ঘাটে আসি। পরে সকাল পৌনে ১১টা থেকে আমরা উদ্ধারকাজ শুরু করি। পরে দুপুর সোয়া ১টার দিকে আড়াই ঘন্টা পর ট্রাকটিকে ফেরিঘাটের পন্টুনে তুলতে সক্ষম হই। আমাদের কাজে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।


দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ওসি জেএম সিরাজুল কবির বলেন, আমরা রাতেই খবর শুনে দৌলতদিয়া ৭নম্বর ফেরিঘাটের ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পরে ট্রাকের চালককে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। ট্রাকটি উদ্ধারের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে তারা সকালে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ট্রাকের চালক এখন সুস্থ আছে এবং আমরা ঘটনাস্থলে সর্বক্ষণ রয়েছি।