বরিশালে বাকিতে চামড়া সংগ্রহ করছে আড়তদাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ১১ই জুলাই ২০২২ ০৮:০৪ অপরাহ্ন
বরিশালে বাকিতে চামড়া সংগ্রহ করছে আড়তদাররা

বরিশালে কোরবানির দিন দুপরের পর থেকেই চামড়া সংগ্রহ করছে হাতে গোনা কয়েকজন আড়ৎদার। এরমধ্যে কেউ কেউ নগদ টাকায় আবার কেউ কেউ বাকিতে চামড়া সংগ্রহ করছেন। আবার যারা নগদ কিনছেন, তাদের বলা দামে খুশি হতে পারছেন না খুচরো বিক্রেতারা। তারপরও নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় অনেকেই চামড়া বিক্রি করছেন কাঙ্খিত মূল্যের থেকে কমে।


 


বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার থেকে তরিকুল ইসলাম নামে একজন মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, তিনি স্থানীয়ভাবে ৪০ টির মতো চামড়া সংগ্রহ করেছেন। তবে গাড়ি ভাড়া দিয়ে বরিশাল নগরের পদ্মাবতী এলাকায় এসে চামড়ার যে দর শুনছেন তাতে হতাশ হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই।


 


তিনি বলেন, পদ্মাবতী এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীরা মাঝারি গড়নের গরুর চামড়াগুলোর দাম দিতে চাচ্ছে মাত্র ৩৮০ টাকা। কিন্তু গাড়ি ভাড়া দিয়ে স্থানীয়ভাবে কেনা এসব চামড়া এ দামে বিক্রি করলে লোকসান ছাড়া কিছুই করার নেই। কারণ সাড়ে ৪ শত টাকায় প্রতি পিস চামড়া বিক্রি করতে পারলে অন্তত পুজিটা উঠে আসতো।


 


আর এখানকার ব্যবসায়ী  মিজানুর রহমান বলেন, বরিশাল নগরে যে কয়জন ব্যবসায়ী চামড়া কিনছেন, তার মধ্যে আমরাই পুজি খাটিয়ে নগদ টাকায় চামড়া কিনছি। সাইজ অনুযায়ী ৪ থেকে ৫ শত টাকার মধ্যে চামড়া কেনার চেষ্টা করছি। এরথেকে চামড়া প্রতি বেশি টাকা দেয়া আমাদের সম্ভব না।


 


মিজানুর রহমানের বাবা ষাটোর্ধ্ব মজিদ মিয়া জানান, ট্যানারি মালিকদের কাছে এখনও ৫০ লাখ টাকার মতো আটকে আছে। সে টাকা না পেয়ে নতুন করে বিনিয়োগ করাটা সম্পূর্ণ নিজের ঝুকি। যে টাকায় চামড়া কিনছি, তারপর সেটিকে স্থানীয়ভাবে সংরক্ষন করে ঢাকায় পাঠালে আদৌ খরচ উঠবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।


 


এখানকার আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল জলির বলেন, ৪ শত টাকা দিয়ে কেনা একটি চামড়া  লবন ও শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিয়ে সংরক্ষনেই আরও খরচ হয় আড়াইশত টাকা। অর্থাৎ ট্যানারি মালিকদের কাছে পাঠানোর আগেই চামড়ার দাম গিয়ে দাড়ায় সাড়ে ৬ শত টাকা। তারপর কেরিং খরচা দিয়ে সেটির দাম ৭ শত টাকায় গিয়ে ঠেকে। কিন্তু আদৌ ওই চামড়ার পেছনে খরচের এ মূল্য পাবো কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই আমরা কিছু নগদ আবার কিছু বাকিতে চামড়া কিনছি। আবার টাকা আটকে থাকার কারনে অনেকে তো এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন,তাই মাত্র ৪-৫ জন আমরা পদ্মাবতীতে চামড়া সংগ্রহ করছি।


 


আর পোর্টরোডের মরিচ পট্টির চামড়ার আড়ৎদার আলহাজ্ব মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন,আমাদের দেশের চামড়ার মান খুবই ভালো।কিন্তু তারপরও ট্যানারি মালিকরা চামড়ার ন্যায্য মূল্য দিতে চায়না। আমি আড়াইশত থেকে সর্বোচ্চ ১২ শত টাকায় চামড়া কিনছি। কিন্তু গোটা টাকাই বাকি রাখছি। কারণ বকেয়া টাকা তো পেলাম না। তারওপর নতুন করে লবন  ও শ্রমিক খরচ দিয়ে নগদ টাকায় চামড়া কেনা সম্ভব না। যারা বাকিতে রাজি আছেন তাদের চামড়া রাখছি, যারা রাজি নন তাদের টা নিয়ে কথা বলছি না।