৬৫ দিনের অবরোধ শুরু, ভারতীয় জেলে রুখতে টহল জোরদারের দাবী

নিজস্ব প্রতিবেদক
আনোয়ার হোসেন আনু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার ২০শে মে ২০২২ ০৬:১২ অপরাহ্ন
৬৫ দিনের অবরোধ শুরু, ভারতীয় জেলে রুখতে টহল জোরদারের দাবী

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সমুদ্রে মাছ শিকারের উপড় ৬৫ দিনের অবরোধ। সামুদ্রিক মাছের বাঁধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষনে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন মৎস্য অধিদপ্তর। চলতি বছর সমুদ্রে ইলিশের আকাল গেছে। ইলিশ মৌসুম শুরু হবে এখন। এরই মধ্যে সমুদ্রে অবরোধ জেলে ও মৎস্যজীবিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অবরোধকালীন সময়ে নিবন্ধিত জেলেদের প্রত্যেককে ৮৬ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষনা দিলে জেলেরা এতে খুশি নয়। কারন প্রয়োজনের তুলনায় এ খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছে জেলেরা। 


সমুদ্রে অবরোধকে ঘিরে সমুদ্রে থাকা সকল মাছধরা ট্রলার মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, পাথরঘাটা, রাঙ্গাবালী, তেতুলিয়া, ভোলা সহ উপকুলীয় এলাকার নদনদীতে এসে নোঙ্গর করে জেলেরা নিজ নিজ গন্তব্যে পরিবারের কাছে ফিরে গেছে। আবার অনেকেই এসব ট্রলারে থাকা ছেড়া জাল মেরামতের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। অনেকে আবার ট্রলার মেরামতের জন্য ডগে তুলেছেন। 


তবে এবছর কাঙ্খিত ইলিশ ধরা না পড়ায় অনেক জেলে শ্রমিকরা সমুদ্রে মাছ শিকারে ফিরবে না এমন সংকার মধ্যে রয়েছে ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ আবার পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন এমনটাই জানিয়েছেন আড়তদাররা। 


মৎস্য ভিত্তিক অর্থনীতির সুরক্ষায় এসব জেলেদের পেশা পরিবর্তন রোধে খাদ্য সহায়তার পরিমান বৃদ্ধিসহ ভারতের মত আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবী জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ভারতীয় জেলেদের  বঙ্গোপসাগরে অবাধ বিচরণ রোধে মৎস্য অধিদপ্তরকে অগ্রনী ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানিয়েছে মৎস্য জীবিরা।


এফবি আব্দুল্লাহ-২ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া জানান, সাগরে তেমন মাছ নেই। তাই আগে ভাগেই ট্রলার নিয়ে তীরে ফিরেছি। কিছু ছেড়া জাল রয়েছে। এসব জাল সেলাই করতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। তারপর বেকার সময় পার করতে হবে। সরকার আমাদের যে চাল দিবে তা পেতে অনেক সময় লাগবে। আর এছাড়া চাল তুলনায় খুবই কম। এ প্রনোদনা দিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখা দায় হবে। তাই অন্য কাজ করতে হবে। 


এফবি সোনালী-২ ট্রলারের মাঝি মোস্তফা মিয়া জানান, আমাদের যে প্রনোদনা দেয় তা অবরোধের শুরুতে পেলে অনেকটা সুবিধা হতো। বঙ্গোপসাগরে অবরোধকালীণ সময়ে ভারতীয় জেলেরা আমাদের জলসীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাই নৌ বাহিনীকে টহল জোরদার করার অনুরোধ জানাচ্ছি। 


কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি ও লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, জেলেদের প্রনোদনা বাড়ানোসহ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে গভীর সাগরে প্রশাসনের টহল বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। যাতে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা এদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করতে না পারে।  


উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, এ অবরোধের পর সাগরে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ার আশা প্রকাশ করছি। এছাড়া এ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে কর্মহীন ইলিশ শিকারী  ১৮হাজার ৩শ’ ০৫ জন জেলেকে দুই ধাপে ৮৬কেজি করে চাল প্রদান করা হবে।