প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলা জাতি গঠনে অবদান রাখে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চা জাতির জন্য খুবই প্রয়োজন।বুধবার (১১ মে) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনকেও এগিয়ে নিয়ে যান। ক্রীড়াঙ্গনকে সময় উপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান), আমার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলও খেলতেন। এমনকি কামাল-জামালের স্ত্রীরাও খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জয়ী হতেই হবে- এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামতে হবে এবং খেলতে হবে।
ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের সফলতা বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ ছাড়া গ্রামীণ খেলাগুলো চালুর ব্যবস্থা নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই, আমাদের দেশীয় খেলাগুলো আরও এগিয়ে যাক। এ খেলাগুলো আন্তঃস্কুল প্রতিযোগাতায় আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।এ সময় মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন।এদিন ক্রীড়াঙ্গনে গৌরবোজ্জ্বল অবদান রাখার জন্য দেশের ৮৫ জন গুণী ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার’ দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর দীর্ঘ আট বছরের পুরস্কার একসঙ্গে দেওয়া হয়। ২০১৩ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এই ৮৫ জন খেলোয়াড় ও সংগঠককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। যেখানে ৪৬ জন ছিলেন ক্রীড়াবিদ ও ৩৯ জন রয়েছেন ক্রীড়া সংগঠক।
পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে আঠারো ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, এক লাখ টাকার চেক এবং একটি সম্মাননাপত্র।
জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তালিকা
২০২০ সাল (৮ জন) : মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল (মরণোত্তর)-খেলোয়াড় ও সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা আফজালুর রহমান সিনহা (মরণোত্তর)-সংগঠক (ক্রিকেট), নাজমুল আবেদীন ফাহিম–সংগঠক (ক্রিকেট কোচ), মো. মহসীন-খেলোয়াড় (ফুটবল), মো. মাহাবুবুল এহছান রানা-খেলোয়াড় (হকি), গ্র্যান্ডমাস্টার মোল্লা আব্দুল্লাহ আল রাকিব–খেলোয়াড় (দাবা), বেগম মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন–খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), আব্দুল কাদের স্বরণ–খেলোয়াড় (ব্যাডমিন্টন–বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী)।
২০১৯ সাল (১১ জন) : তানভীর মাজহার তান্না–সংগঠক (ফুটবল), অরুন চন্দ্র চাকমা (মরণোত্তর)–(অ্যাথলেটিক্স), লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মইনুল ইসলাম–সংগঠক (আরচারি), দিপু রায় চৌধুরী–খেলোয়াড় (ক্রিকেট), কাজী নাবিল আহমেদ–সংগঠক (ফুটবল), ইন্তেখাবুল হামি-সংগঠক (শ্যুটিং), বেগম মাহফুজা রহমান তানিয়া–খেলোয়াড় (সাঁতার), বেগম ফারহানা সুলতানা শীলা–খেলোয়াড় (সাইক্লিং), টুটুল কুমার নাগ–খেলোয়াড় (হকি), মাহবুবুর রব – খেলোয়াড় (ব্যাডমিন্টন), বেগম সাদিয়া আক্তার উর্মি– খেলোয়াড় (টেবিল টনিস – বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী)।
২০১৮ সাল (১০ জন) : ফরিদা আক্তার বেগম – সংগঠক (অ্যাথলেটিক্স), জ্যোৎস্না আফরোজ – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), মো. রফিক উল্যা আখতার মিলন – সংগঠক (অ্যাথলেটিক্স), কাজী আনোয়ার হোসেন – খেলোয়াড় (ফুটবল), মো. শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর–সংগঠক (ফুটবল), মীর রবিউজ্জামান – খেলোয়াড় (জিমন্যাস্টিকস), মোহাম্মদ আলমগীর আলম – খেলোয়াড় (হকি), তৈয়েব হাসান সামছুজ্জামান – সংগঠক (রেফারী), নিবেদিতা দাস–খেলোয়াড় (সাঁতার), মাহমুদুল ইসলাম রানা–সংগঠক (তায়কোয়ানডো)।
২০১৭ সাল (১১ জন) : শাহরিয়া সুলতানা – খেলোয়াড় (ভারোত্তোলন), আওলাদ হোসেন-সংগঠক ( জুডো, কারাতে ও মার্শাল আর্ট), ওয়াসিফ আলী – খেলোয়াড় (বাস্কেটবল), শেখ বশির আহমেদ মামুন – সংগঠক (জিমন্যাস্টিকস), মো. সেলিম মিয়া – খেলোয়াড় (সাঁতার), হাজী মো .খোরশেদ আলম – সংগঠক (রোইং), আবু ইউসুফ – খেলোয়াড় (ফুটবল), এ. টি. এম. শামসুল আলম – সংগঠক (টেবিল টেনিস), রহিমা খানম যুথী – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), আসাদুজ্জামান কোহিনুর – সংগঠক (হ্যান্ডবল), মো. মাহবুব হারুন – খেলোয়াড় (হকি)।
২০১৬ সাল (১৩ জন) : মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান – খেলোয়াড় (সাঁতার), লে. কমান্ডার এ কে সরকার (অব.) – সংগঠক (বাস্কেটবল), বেগম সুলতানা পারভীন লাভলী – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), মুক্তিযোদ্ধা শামীম-আল-মামুন – সংগঠক (ভলিবল), আরিফ খান জয় – খেলোয়াড় (ফুটবল), খন্দকার রকিবুল ইসলাম – খেলোয়াড় (ফুটবল), মোহাম্মদ জালাল ইউনুস – সংগঠক (ক্রিকেট), মো: তোফাজ্জল হোসেন – সংগঠক (অ্যাথলেটিক্স), কাজল দত্ত – খেলোয়াড় (ভরোত্তোলন), মো: তাবিউর রহমান পালোয়ান – সংগঠক (কুস্তি), জেড. আলম (মরণোত্তর) – সংগঠক (ফুটবল ), আবদুর রাজ্জাক সোনা মিয়া (মরণোত্তর) – খেলোয়াড় (হকি), কাজী হাবিবুল বাশার – খেলোয়াড় (ক্রিকেট)।
২০১৫ সাল (১১ জন): অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম – সংগঠক (ক্যারম), মো: আহমেদুর রহমান – খেলোয়াড় ও সংগঠক (জিমন্যাস্টিক্স), আহমেদ সাজ্জাদুল আলম – সংগঠক (ক্রিকেট), খাজা রহমতউল্লাহ (মরণোত্তর) – খেলোয়াড় (হকি), মাহ্তাবুর রহমান বুলবুল – খেলোয়াড় ও সংগঠক (বাস্কেটবল), বেগম ফারহাদ জেসমীন লিটি – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), বরুন বিকাশ দেওয়ান – খেলোয়াড় (ফুটবল), রেহানা জামান – খেলোয়াড় (সাঁতার), মো. জুয়েল রানা – খেলোয়াড় (ফুটবল), বেগম জেসমিন আক্তার – খেলোয়াড় (ভারোত্তোলন, কারাতে ও তায়কোয়ানডো), বেগম শিউলী আক্তার সাথী – খেলোয়াড় (ব্যাডমিন্টন)।
২০১৪ সাল (১০ জন) : শামসুল বারী (মরণোত্তর) – খেলোয়াড় ও সংগঠক (হকি), এনায়েত হোসেন সিরাজ – সংগঠক (ক্রিকেট), মো. ফজলুর রহমান বাবুল – সংগঠক (ফুটবল), সৈয়দ শাহেদ রেজা – সংগঠক (হ্যান্ডবল), মো. ইমতিয়াজ সুলতান জনি – খেলোয়াড় (ফুটবল), মোহাম্মদ এহসান নামিম – খেলোয়াড় (হকি), বেগম কামরুন নেছা – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), মো. সামছুল ইসলাম – খেলোয়াড় (সাঁতার), মিউরেল গোমেজ – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), মো. জোবায়েদুর রহমান রানা – খেলোয়াড় (ব্যাডমিন্টন)।
২০১৩ সাল (১১ জন) : মুজাফ্ফর হোসেন পল্টু-– খেলোয়াড় ও সংগঠক (ক্রিকেট), কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ – সংগঠক (হ্যান্ডবল), উইং কমান্ডার (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদ – সংগঠক (ভারোত্তোলন), সামশুল হক চৌধুরী – সংগঠক (ফুটবল), মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ্জাহান মিজি – খেলোয়াড় (সাঁতার), রোকেয়া বেগম খুকী – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), বেগম মুনিরা মোর্শেদ খান হেলেন – খেলোয়াড় (টেবিল টেনিস), মো. ইলিয়াস হোসেন – খেলোয়াড় (ফুটবল), বেগম জ্যোৎস্না আক্তার – খেলোয়াড় (অ্যাথলেটিক্স), ভোলা লাল চৌহান – খেলোয়াড় (স্কোয়াশ), খালেদ মাহমুদ সুজন – খেলোয়াড় (ক্রিকেট)।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।