নওগাঁর মান্দায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্তিকরণ করায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা.এস এম ফজলুর রহমান ।
এ বিষয়ে আজ ( রবিবার ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সিপিবির কার্যালয় ডা.এস এমন ফজলুর একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি। এর আগে গত ২৫ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি লিখিত অভিযোগও করেন তিনি ।
জানা গেছে, সম্প্রতি মান্দা উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভূক্ত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকার ২৪ জনই অমুক্তিযোদ্ধা। এ ছাড়া সুপারিশের তালিকায় রয়েছেন আরও ৩০ জন অমুক্তিযোদ্ধা। সুপারিশকৃত তালিকায় নাম রয়েছে উপজেলার কাঁশোপাড়া ইউনিয়নের চকউলি গ্রামের মৃত সোলাইমান আলীর ছেলে আবদুল গফুর সরদারের। ওই সময় আবদুল গফুর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি । কিছু মুক্তিযোদ্ধা অনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তির অপচেষ্টা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডাক্তার ফজলুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্তিকরণ আমাকে হতবাক বিস্মৃত করেছে। অপ্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এক বুক হাহাকার নিয়ে বেঁচে আছেন। অপরদিকে অপ্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। এছাড়াও আব্দুস সামাদ মন্ডল ও সামছুদ্দিন প্রাং মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও ২ ও ৩ নং তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, এটা শুধু আমার ইউনিয়নের দৃষ্টান্ত। এছাড়াও উপজেলার অন্য ১৩ টি ইউনিয়নেও অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাদের বিষয়ে এলাকা থেকে খোঁজ খবর নিয়েছেন তিনি। তাদেরও একই অবস্থা। কিন্তু কিছু মুক্তিযোদ্ধা অনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তির অপচেষ্টা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, এসব অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ দিয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্তিকরণের জন্য তিনি আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলার সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আফসার আলী মন্ডল বলেন, বেশ কয়েক মাস আগে সুপারিশগুলো পাঠানো হয়েছিল। আর যাদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের সাথে যারা সহযোদ্ধা ছিল তারাই সুপারিশ করেছেন। তবে আমার সাথে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারা ছিলনা। এর বেশি কিছু বলতে পারছিনা।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্তিকরণের বিষয়ে আমার কাছে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।