সিলিং ফ্যানে ঝুলছিল গৃহবধূর লাশ, স্বজনের অভিযোগ হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৪শে জুন ২০২১ ০৯:৩০ অপরাহ্ন
সিলিং ফ্যানে ঝুলছিল গৃহবধূর লাশ, স্বজনের অভিযোগ হত্যা

নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরের একটি ছাত্রাবাস থেকে সুমি আখতার (১৭) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে উপজেলা সদরের মাতৃছায়া ছাত্রাবাসের একটি কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।



এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূর স্বামী সেলিম রেজার (২২) বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় হত্যা মামলা করেছেন গৃববধূর বাবা মো.আলী হোসেন। ঘটনার পর থেকে সেলিম রেজা পলাতক রয়েছে। তিনি একটি কীটনাশক কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। ছাত্রাবাসের যে কক্ষ থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়, সেই কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন সেলিম রেজা। 


মামলার এজাহার ও সাপাহার থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁর পতœীতলা উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের মেয়ে সুমি আখতারের সঙ্গে গত বছর (২০২০) সাপাহার উপজেলার উত্তরপাতাড়ী গ্রামের তফিজুল ইসলামের ছেলে সেলিম রেজার বিয়ে হয়। বিয়ের তিন-চার মাস পর থেকেই তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে সালিস বৈঠকও হয়েছে। বিয়ের পর থেকে অধিকাংশ সময় সেলিম মাতৃছায়া ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে ভাড়া ছিলেন।


করোনাকালে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ছাত্রাবাসের অন্য কক্ষগুলো খালি। এক বছর ধরে তাঁর স্ত্রী সুমি মাঝেমধ্যে ওই ছাত্রাবাসের কক্ষে থাকতেন। সেলিম গতকাল রাত ৮টার দিকে তাঁর শ্বশুরকে ফোন করে জানান, সুমি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে সুমির বাবা ও অন্য স্বজনেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সেলিম সেখান থেকে পালিয়ে যান। 


পরে রাত ৯টার দিকে সাপাহার থানা–পুলিশ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় সুমির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।


সুমির বাবা আলী হোসেনের অভিযোগ, সেলিম তাঁর মেয়েকে হত্যা করেছেন। আমার মেয়ে ভালো ছিল কয়েকদিন আগে নিজে আমার জামাই সেলিম এর কাছে রেখে গেলাম। আমার মেয়ের আচরণ স্বাভাবিক ছিল। আমার জামাই জানায় আপনার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। কিন্তু আত্মহত্যা কখনোই করতে পারোনা আমার মেয়েটা। তিনি দাবি করেন, আমার ধারণা তাঁকে হত্যা করার পর লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।


সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, সুমির মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে গলায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ আজ সকালে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার আসামি সেলিম রেজাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আজ সকালে ওই গৃহবধূর স্বামী সেলিম রেজার বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় হত্যা মামলা করেছেন গৃববধূর বাবা মো.আলী হোসেন।