দেশের সর্ববৃহৎ আমবাজার নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলা। ইতিমধ্যে নানান জাতের আম কেনা বেচার মধ্যে দিয়ে বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে জমে উঠেছে আমের হাট । মৌসুমের শুরু থেকে আমের দাম তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন আম বিক্রেতারা।
গত বছরের তুলনায় এবছরে আমের উৎপাদন যেমন বেশি, ঠিক তেমনি ভাবে আমের বাজারমূল্য অনেকটা কম বলে অভিযোগ আমচাষীদের।
চলতি বছরে এই উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১লক্ষ মেট্রিকটন। প্রায় ১৫ শত কোটি টাকার আম বানিজ্য হতে পারে এই উপজেলার আমবাজার থেকে। কিন্তু চলমান সময়ে আমের বাজারদর নিম্নমূখী হবার ফলে অনেকটাই হতাশার বীজ বপন হয়েছে আম চাষীদের মনে।
বৃহষ্পতিবার (১৭ জুন) ও শুক্রবার (১৮ জুন) সকাল থেকে সরেজমিনে আমবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সারি করা ভ্যানের উপর নানা জাতের আমের পসরা নিয়ে বসে আছেন আম বিক্রেতারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাত হলো ল্যাংড়া, নাগফজলী, হিমসাগর, আম্রপালি অন্যতম। আম কেনার জন্য বাইরের ব্যাপারী থাকলেও ক্রেতারা পাচ্ছেন না ন্যায্যমূল্য।
প্রতিমণ ল্যাংড়া বিক্রয় হচ্ছে ৮ শত থেকে ১২ শত টাকা, প্রতিমণ নাগফজলী ১ হাজার থেকে ১২ শত, প্রতিমণ হিম সাগর ১৫ শত থেকে ১৭ শত, প্রতিমণ আম্রপালী ২ হাজার থেকে ২৪ শত টাকা ।
চলতি বাজারমূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম বলছেন আম বিক্রেতারা।
জেলার বিখ্যাত জাতের আম আম্রপালি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত সময় ২২জুন আম্রপালী জাতের আম বাজারজাত করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের অনুমতিক্রমে পরিপক্ক আম বাজারজাত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
গত বছরে আম্রপালি জাতের আম সন্তোষজনক মূল্যে বিক্রয় হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই এই প্রজাতির আমের বাজার মূল্য দেখে অনেকটা হতাশ আম বিক্রেতারা।
আম বিক্রয় করতে আসা একজন আমচাষী বলেন, প্রায় ১০মণ ল্যাংড়া আম বিক্রয় করতে এসেছি। আমার আমের কালার একটু খারাপ থাকার জন্য প্রতিমণ আম বিক্রয় করলাম সাড়ে ৭ শত টাকা। অথচ এই জাতের আম গত বছরে ২৪/২৫ শত টাকা দরে বিক্রয় করেছি।
এভাবে বাজারদর কম থাকলে আমরা চাষীরা সার বিষের দোকানের বাঁকী পরিশোধ কিভাবে করবো আর সংসার চালাবো কিভাবে!
বেশ ক'জন আম বিক্রেতা সাথে কথা হলে তারা বলেন, এই বছরে আমের দাম নেই। কম করে আম বিক্রি করতে আসলে অনেক সময় ভ্যান ভাড়া দিতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এবছরে সাপাহারে আমের বাজারদর না বাড়লে কৃষকেরা অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকার অভিজ্ঞমহল।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।