দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তিতে উত্তম জীবন সঙ্গীর বিকল্প নেই। সে কারণে দুনিয়ার প্রত্যেক পুরুষ চায় উত্তম ও যোগ্যতা সম্পন্ন স্ত্রী। আবার প্রত্যেক নারীর কামনা থাকে যোগ্যতা সম্পন্ন স্বামী। আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ ছাড়া উত্তম নারী-পুরুষের উত্তম জীবনসঙ্গী লাভ সম্ভব নয়।
এ কারণেই মানুষ আল্লাহর কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী ধরনা ধরে। দোয়া করে। যেন আল্লাহ তাআলা মানুষকে উত্তম জীবনসঙ্গী দান করেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের একটি আয়াতে মুমিন নারী-পুরুষের জন্য সে রকমই একটি দোয়া তুলে ধরেছেন-
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা হাব্লানা মিন আযওয়াঝিনা ওয়া জুর্রিয়াতিনা কুর্রাতা আইয়ুনিও ওয়াঝআলনা লিলমুত্তাক্বিনা ইমামা।’
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন। যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদেরকে (পুরুষদেরকে) মুত্তাকি লোকদের নেতা বানিয়ে দাও।’ (সুরা ফুরক্বান : আয়াত ৭৪)
নারী-পুরুষ বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমেই শুরু করে পরিবারিক জীবন। পারিবারিক জীবনে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য উত্তম জীবনসঙ্গীর বিকল্প নেই। উত্তম জীবনসঙ্গী না পেলে প্রতিটি মানুষের জীবনই হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। সে কারণেই আল্লাহর কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী লাভে প্রত্যেক নারী-পুরুষের দোয়া করা একান্ত কর্তব্য।
সে কারণে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু মুমিন নারী-পুরুষের প্রতি একটি দোয়া ও আমল করার নসিহত করেছেন। মুমিন নারী-পুরুষ উত্তম জীবনসঙ্গী লাভের জন্য নিয়মিত সুরা ফাতেহা ও সুরা ইয়াসিন পড়ে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করবে। অতঃপর এ দোয়া পড়বে-
اللَّهُمَّ ارْزُقْنِی زَوْجَةً وَدُوداً وَلُوداً شَکُوراً غَیُوراً إِنْ أَحْسَنْتُ شَکَرَتْ وَ إِنْ أَسَأْتُ غَفَرَتْ وَ إِنْ ذَکَرْتُ اللَّهَ تَعَالَى أَعَانَتْ وَ إِنْ نَسِیتُ ذَکَّرَتْ وَ إِنْ خَرَجْتُ مِنْ عِنْدِهَا حَفِظَتْ وَ إِنْ دَخَلْتُ عَلَیْهَا سُرَّتْ وَ إِنْ أَمَرْتُهَا أَطَاعَتْنِی وَ إِنْ أَقْسَمْتُ عَلَیْهَا أَبَرَّتْ قَسَمِی وَ إِنْ غَضِبْتُ عَلَیْهَا أَرْضَتْنِی یَا ذَا الْجَلَالِ وَ الْإِکْرَامِ هَبْ لِی ذَلِکَ فَإِنَّمَا أَسْأَلُکَه و لا آخِذ اِلاّ ما مَنَنْتَ و اَعْطَیْتَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মারযুক্বনি যাওঝাতান ওয়াদুদান ওয়ালুদান শাকুরান গাইয়ুরান, ইন আহসানতু শাকারাত ওয়া ইন আসাতু গাফারাত, ওয়া ইন জাকারতুল্লাহা তাআলা আআনাত, ওয়া ইন নাসিতু জাক্কারাত ওয়া ইন খারাঝতু মিন ইংদিহা হাফিজাত, ওয়া ইন দাখালতু আলাইহা সুর্রাত, ওয়া ইন আমারতুহা আত্বাআতনি ওয়া ইন আক্বসামতু আলাইহা আবার্রাত ক্বাসামি, ওয়া ইন গাদিবতু আলাইহা আরদাতনি ইয়া জালঝালালি ওয়াল ইকরামি হাবলি জালিকা ফা-ইন্নামা আসআলুকাহু ওয়া লা আখিজ ইল্লা মা মানানতা ওয়া আত্বাইতা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে এমন একজন সুন্দর, সন্তান-বৎসল, শোকরগুজার জীবনসঙ্গী দান কর, যে আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হবে যদি আমি তার সাথে ভালো ব্যবহার করি এবং আমাকে ক্ষমা করবে যদি আমি তার সাথে মন্দ ব্যবহার করি।
এমন একজন সঙ্গী দান কর যে আমাকে আল্লাহর স্মরণে সাহায্য করবে এবং আমি স্মরণ করতে ভুলে গেলে আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে।
এমন একজন সঙ্গী দান কর যে আমার অনুপস্থিতিতে আমার প্রতিরক্ষা করবে এবং আমার উপস্থিতিতে আমাকে অনন্দিত করবে।
এমন একজন সঙ্গী দান কর যে আমার কথায় গুরুত্ব প্রদান করবে এবং তার বিরদ্ধে হলেও আমার মতামতকে বিবেচনা করবে।
এমন একজন সঙ্গী দান কর যে আমি রেগে গেলে আমাকে শান্ত করবে।
হে সম্মান ও মর্যাদার মালিক! আমাকে এমন সঙ্গী প্রদান কর, তার জন্য আমি তোমার কাছেই প্রার্থনা করি এবং তুমি প্রদান না করলে আমার জন্য কোনো সিদ্ধান্তই হতে পারেনা।’
প্রত্যেক উপযুক্ত নারী-পুরুষের উচিত নিয়মিত সুরা ফাতেহা ও সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করে ২ রাকাআত নামাজ পড়ে এ দোয়াটির মাধ্যমে উত্তম জীবন সঙ্গী তালাশ করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক নারী ও পুরুষকে উত্তম জীবনসঙ্গী লাভে তারই কাছে প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। কুরআনে উল্লেখিত দোয়া ও হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু নসিহত মোতাবেক আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।