প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ৯:৪৩

আজকের দুনিয়ায় মানুষ সময়ের পেছনে ছুটছে। কাজ, ব্যবসা, মোবাইল, সামাজিক যোগাযোগ—সবকিছুই আমাদের জীবনকে এমনভাবে ব্যস্ত করে ফেলেছে যে নামাজের সময় এলে অনেকেই বলে, ‘একটু পর পড়ব’। কিন্তু এই ‘একটু পর’-এর মধ্যেই মানুষ ভুলে যায়, হারিয়ে ফেলে আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের সেই বরকতময় সম্পর্ক। ইসলামে নামাজকে শুধু একটি ফরজ কাজ নয়, বরং জীবনযাত্রার মূল কেন্দ্র হিসেবে দেখা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে” (সূরা আনকাবুত, আয়াত ৪৫)। অর্থাৎ নামাজ শুধু ইবাদত নয়, বরং মানুষের নৈতিকতা ও আচরণের নিয়ন্ত্রকও। যে ব্যক্তি নিয়মিত নামাজ আদায় করে, সে মিথ্যা, প্রতারণা ও অনৈতিকতা থেকে দূরে থাকে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন বান্দার প্রথম হিসাব হবে নামাজ নিয়ে। যদি নামাজ ঠিক থাকে, তবে অন্যান্য আমলও ঠিক থাকবে।” (তিরমিজি)। এ থেকেই বোঝা যায়, নামাজ একজন মুসলমানের জীবনের মানদণ্ড। নামাজ ঠিক থাকলে জীবনের সবকিছুতেই বরকত আসে।
আজ দেখা যাচ্ছে, প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ নামাজে অনিহা দেখাচ্ছে। কেউ কাজে ব্যস্ত, কেউ মিটিংয়ে, কেউ আবার সামাজিক মাধ্যমে মগ্ন। অথচ নামাজের জন্য সময় বের করা মানেই জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করে, সে ধর্মের সীমার বাইরে চলে যায়।” (বায়হাকি)।
নামাজ শুধু আল্লাহর স্মরণ নয়, বরং আত্মার প্রশান্তির উৎস। দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মানুষ বারবার মনে করিয়ে দেয় যে সে আল্লাহর বান্দা, দুনিয়ার নয়। এই স্মরণই মানুষকে অহংকার ও পাপ থেকে দূরে রাখে।

বর্তমান সমাজে পরিবারে নামাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জরুরি। বাবা-মা যদি সন্তানদের সামনে নামাজ পড়েন, তবে তারাও শিখবে আল্লাহর পথে চলা। সমাজে ন্যায়, শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার জন্য নামাজের কোনো বিকল্প নেই।
আজকের দিনে মুসলমানদের উচিত নিজেদের দিকে ফিরে তাকানো—আমরা কি সত্যিই নামাজকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি? না কি দুনিয়ার কাজেই মগ্ন হয়ে আল্লাহর আহ্বান ভুলে যাচ্ছি?
যে জাতি নামাজে অবহেলা করে, সে জাতি আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়। তাই এখনই সময়, ব্যস্ততার ফাঁকে নয়, বরং ব্যস্ততার মাঝেই নামাজকে জীবনের কেন্দ্রবিন্দু বানানোর।