প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৮
আমরা কেউই গুনাহমুক্ত নই। দুনিয়ার চলার পথে ছোট বা বড় কোনো না কোনো গুনাহ আমাদের জীবনে জড়িয়ে যায়। অথচ গুনাহ নিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ নেই। জান্নাত হলো পবিত্র স্থান, যেখানে কোনো কলুষতা ও অপবিত্রতার ঠাঁই নেই। তাই জান্নাত পেতে হলে আল্লাহর রহমতে পবিত্র হতে হয়। এ জন্য আল্লাহ তাঁর বান্দাদের গুনাহ মোচনের চারটি পথ খুলে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
প্রথম উপায় হলো তাওবাতুন নাসুহা করা। আন্তরিকভাবে গুনাহর জন্য অনুশোচনা করে ভবিষ্যতে তা থেকে বিরত থাকার প্রতিজ্ঞাই হলো তাওবা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিনি নিজেই প্রতিদিন আল্লাহর দরবারে একশতবার তাওবা করেন। কোরআনেও বারবার তাওবা করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই আন্তরিক তাওবা মানুষের গুনাহ মুছে দেয়।
দ্বিতীয় উপায় হলো ইস্তিগফার। আল্লাহর কাছে গুনাহ ক্ষমা প্রার্থনার নামই ইস্তিগফার। মহানবী (সা.) বিভিন্ন দোয়া পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে শিখিয়েছেন। এর মধ্যে সাইয়েদুল ইস্তিগফার বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এ দোয়া সকালে পড়ে রাতে মারা গেলে অথবা রাতে পড়ে সকালে মারা গেলে জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে।
তৃতীয় উপায় হলো অসুস্থতায় ধৈর্যধারণ করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বর্ণনা করেছেন, বান্দার অসুস্থতা তার গুনাহ মুছে দেয়, যদি সে ধৈর্য ধরে। কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, তিনি অবশ্যই বান্দাদের কখনো না কখনো বিপদ, ক্ষুধা, ক্ষতি, ভয় ইত্যাদি দিয়ে পরীক্ষা করবেন। যারা এসব পরীক্ষায় ধৈর্য ধরে, তাদের জন্য রয়েছে সুখবর।
চতুর্থ উপায় হলো বিপদ-বিপর্যয়ের সময় ধৈর্য ও সবর করা। বিপদে মানুষের গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, সবর ও তাকওয়া অবলম্বনকারীরাই সফল হয়। নবী-রাসূলগণ সবরের সর্বোচ্চ উদাহরণ। তাই মুমিনের উচিত দুঃসময়ে ধৈর্য এবং সুসময়ে শুকরিয়া আদায় করা।
আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, যে কেউ গুনাহ করে পরে তাওবা করলে এবং সংশোধন হলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। পক্ষান্তরে যারা তাওবা না করে গুনাহে লিপ্ত থাকে, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। তাই গুনাহ মোচনের এ চার উপায় মেনে চলা মুমিনের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী বলেন, গুনাহ মুছে ফেলা ছাড়া জান্নাতের পথ মসৃণ হয় না। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সবাইকে আন্তরিক তাওবা, ইস্তিগফার, ধৈর্য ও সবরের মাধ্যমে গুনাহ মোচন করে জান্নাতের উপযুক্ত বানিয়ে নেন।
শেষতক, জীবন আসলে একটি পরীক্ষা। পরীক্ষা থেকে মুক্তি নেই। তাই মুমিনের করণীয় হলো সর্বাবস্থায় আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া, তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং তাঁর ওপর ভরসা রাখা। আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফিক দিন।