আজ হিজরি নববর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ৩১শে জুলাই ২০২২ ১২:৩৫ অপরাহ্ন
আজ হিজরি নববর্ষ

আজ রোববার (৩১ জুলাই) পহেলা মহরম। হিজরি ১৪৪৩ সনকে বিদায় জানিয়ে শুরু হলো ১৪৪৪ হিজরি বর্ষের পথচলা। বাংলাদেশের আকাশে শনিবার সন্ধ্যায় মহরম মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় আগামী ৯ আগস্ট সারা দেশে পবিত্র আশুরা উদযাপিত হবে।


বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিজরি সনের শুভসূচনা হয়। তাই মুসলমান ও আরব বিশ্বে হিজরি নববর্ষ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে দাপ্তরিক কাজকর্ম হয় আরবি ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে।


রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ত্যাগ ও কোরবানির ঐতিহাসিক স্মৃতি স্মারক হিজরি (আরবি) সন। আল্লাহর নির্দেশে বিশ্বনবী দিন প্রচারে প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করে ইয়াসরিবে (মাদিনা মোনাওয়ারায়) হিজরত করেন, যাকে কেন্দ্র করেই হিজরি সন।


বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষে আমাদের দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন তথা কর্মসূচি পালিত হয়ে থাকে। আরবি নববর্ষের অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য থাকা সত্ত্বেও উল্লেখ করার মতো কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না বললেই চলে। হিজরি বছরের শেষ মাস এবং শুরুর মাস অনেক মর্যাদা ও ফজিলতের মাস। তাই এ হিজরি বছরের শেষ এবং নতুন বছরের প্রথম রাত ও দিন বিগত দিনের গোনাহ মাফ এবং আগামী দিনের কল্যাণ লাভের এক মর্যাদাপূর্ণ সময়।


ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী এই মহরম মাস। ইসলামের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সূত্রপাত হয় এ মাসে। শুধু উম্মতে মোহাম্মাদি-ই নয়, বরং পূর্ববর্তী অনেক উম্মত ও নবির অবিস্মরণীয় ঘটনা সংঘটিত হয় এ মাসে। মহরম অর্থ মর্যাদাপূর্ণ। মহরম সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা ১২। যেদিন থেকে তিনি সব আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চারটি হলো সম্মানিত মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং তোমরা এই মাসগুলোর সম্মান বিনষ্ট করে নিজেদের প্রতি অত্যাচার কোরো না।’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ৩৬)।


অনেকেই আশুরার ঐতিহ্য বলতে রসুলুল্লাহ (স.)-এর প্রিয়তম দৌহিত্র হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত ও নবীপরিবারের কয়েক জন সদস্যের রক্তে রঞ্জিত কারবালার ইতিহাসকেই বুঝে থাকে। বাস্তবতা হলো, হজরত হুসাইন (রা.)-এর মর্মান্তিক শাহাদতের ঘটনার অনেক আগে থেকেই আশুরা তাৎপর্যপূর্ণ ও রহস্যঘেরা দিন। কারণ কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬১ হিজরির ১০ মহরম। তারও বহু আগে ১০ মহরম হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তার সাথিদের ফেরাউন ও তার সৈন্যদের থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘটনা; যেখানে দরিয়ায় রাস্তা বানিয়ে আল্লাহ তাআলা তাদের নিরাপদে পৌঁছে দেন। এই রাস্তা দিয়ে অতিক্রম করার সময় ফেরাউন ও তার সৈন্যদের দরিয়ায় ডুবিয়ে ধ্বংস করার ঘটনা ঘটে ১০ মহরম।ইসলাম ও মুসলমানের জন্য এ মাসের রয়েছে অনেক শিক্ষণীয় ও পালনীয় বিষয়। তাইতো এ মাসের ৯, ১০ ও ১১ তারিখে রোজা রাখা উত্তম।