রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে জনগণের উন্নয়নে ব্যবহার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩রা জানুয়ারী ২০১৯ ০৭:৩৫ অপরাহ্ন
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে জনগণের উন্নয়নে ব্যবহার করুন

সংসদ সদস্য হওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে সম্পদ বানানো থেকে বিরত থাকতে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যক্তিগত ক্ষমতা মনে করবেন না। এ ক্ষমতাকে জনগণের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করবেন। তারা ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছে, সেই ঋণ শোধের কাজে ব্যবহার করবেন। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। সভায় অংশ নেওয়া একাধিক সংসদ সদস্য এ তথ্য জানান। বৈঠকের শুরুতে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এর আগে আরেকটি অনুষ্ঠানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী দলের সংসদ সদস্যদের জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘কে ভোট দিয়েছে আর কে ভোট দেয়নি, সেটা বিবেচনা করতে যাবেন না। এখন আপনারা যার যার সংসদীয় এলাকার সব মানুষের প্রতিনিধি। সবাইকে সমানভাবে দেখতে হবে। সবার উন্নয়ন করতে হবে, সবার জন্য কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতাকে কেউ নিজেদের সম্পদ মনে করবেন না। আমরা আজ আছি, কিন্তু ক্ষমতা কোনোভাবেই চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতাকে কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করবেন না, সম্পদ অর্জনের হাতিয়ার বানাবেন না। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ যদি পাশে থাকে তবে কেউ আওয়ামী লীগকে রুখতে পারবে না। তাই জনগণের জন্য কাজ করে নিজেদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে হবে। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার সব ধরনের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু এ নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হয়েছে—আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়নি। বরং যারা যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধী, জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করেছে, জনগণ তাদের সমুচিত জবাব দিয়েছে। নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট যুদ্ধাপরাধী সংশ্লিষ্টদের মনোনয়ন দিয়েছে। তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে, নির্বাচন নয়, যেন তাদের লক্ষ্যই ছিল মনোনয়ন বাণিজ্য করা। এ কারণেই তারা ডুবেছে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী সরকারের সময়ও সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করেছি। নির্বাচনের ফলাফলে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াত, স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে উপস্থিত সংসদ সদস্যদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। তারা প্রত্যেকের নামে মামলা করতে পারে। এসব মামলা মোকাবিলা করতে হবে।’ এছাড়া, নানা উপায়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করতে পারে বলেও হুঁশিয়ার করে দেন তিনি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব