প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ১৫:৬
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে সাত দফা দাবিকে সামনে রেখে। শনিবার দুপুর ২টায় কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় সমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাইফুল্লাহ মানসুরের উপস্থাপনায় সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশের প্রথম পর্ব।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে মিছিল ও যানবাহনে করে আগত নেতাকর্মীদের ভিড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তার আশপাশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। অনেকেই দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি পরে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। দীর্ঘদিন পর রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে এমন বড় পরিসরে রাজনৈতিক জমায়েতে সাধারণ মানুষেরও কৌতূহল ছিল চোখে পড়ার মতো।
দলটির দাবি, দেশের স্বাধীনতার পর এই প্রথমবারের মতো তারা এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করছে। এই সমাবেশ ঘিরে দলীয় নেতারা বলছেন, ৭ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। সমাবেশের অন্যতম প্রধান দাবি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলসমূহের জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব গণহত্যার বিচার, মৌলিক সংস্কার, ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
সমাবেশে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, এই সমাবেশ শুধু একটি দলীয় কর্মসূচি নয় বরং গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবির একটি মঞ্চ। যারা বিশ্বাস করেন রাজনৈতিক অঙ্গনে ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও নির্বাচনী স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা দরকার, তাদের সবার পক্ষেই এই সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রচণ্ড গরম ও ভিড় উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশস্থলে অবস্থান করছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং স্বেচ্ছাসেবকরা আগতদের সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করছেন। পুরো উদ্যানজুড়ে দলের পতাকা, ব্যানার, স্লোগান ও গান ছড়িয়ে পড়েছে আন্দোলনমুখর আবহে।
জামায়াত মনে করছে, এই সমাবেশের মাধ্যমে তারা জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারবে এবং সরকারকে ৭ দফা দাবিতে সাড়া দিতে বাধ্য করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই কর্মসূচি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াবে।