ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকের উপর হামলা, বিএনপি নেতা বহিস্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আলমগীর হোসেন - ঠাকুরগাঁও সদর
প্রকাশিত: বুধবার ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:২৮ অপরাহ্ন
ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকের উপর হামলা, বিএনপি নেতা বহিস্কার

ঠাকুরগাঁওয়ে সংবাদকর্মী মামুনের ওপর নৃশংস হামলার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দিয়েছে দৈনিক দেশবাংলা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মামুন অর রশিদ। এ ঘটনায় জড়িত বিএনপি নেতা জবায়দুল হক চৌধুরীকে দলের সকল প্রকার পদ ও পদবী থেকে বহিস্কার করেছে।


বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন দলের অফিসিয়াল প্যাডে স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বহিস্কারের এ আদেশ দেন।


অন্যদিকে, সদ্য বহিস্কৃত বিএনপি নেতা জবায়দুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে রুহিয়া থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এবং পুলিশ অভিযোগপত্রটি এন্টি করেনি বলেও অভিযোগ গণমাধ্যমকর্মীদের। অপদিকে, সাংবাদিক পেটিয়ে প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেরাচ্ছে অভিযুক্ত জবায়দুল।


সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত জবায়দুল হক চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলার রানীশংকৈল উপজেলার সাংবাদিকরা। ঘটনার ২২ ঘন্টা অতিক্রম হলেও কেন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে তাঁর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তাঁরা বলেন, পুলিশ কার ইশারায় ওই চাঁদাবাজ-ভূমিদুস্যুকে গ্রেপ্তার করছে না। তাঁর খুঁটির জোর কথায়? জেলার কোন নেতার ইন্ধন আছে এই চাঁদাবাজের প্রছনে তা খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ দলের হাইকমান্ডের। এসময় চাঁদাবাজ জবায়দুল কে গ্রেপ্তার না করলে থানা ঘেরাও করার কর্মসূচী দেওয়া হবে বলে জানান সাংবাদিকেরা


জানা গেছে, ৫-ই আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি জবায়দুর হক চৌধুরীর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতা স্থানীয় আওয়ামীলীগের সমর্থক সাধারণ মানুষকে মামলায় জড়ানো ও গ্রেপ্তার হতে বাঁচাতে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করেছে। অনেকেই ক্ষেতের ধান বিক্রি করে তাদের হাতে টাকা  তুলে দেয়। এ বিষয়ে সাংবাদিক মামুন কয়েক মাস পূর্বে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে জবায়দুর হক চৌধুরী। এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক মামুন অর রশিদ কালীবাড়ি মহেশপুর এলাকায় যায়।


সন্ধ্যায় বাজারে চায়ের দোকানে অবস্থান করছিলেন মামুন। কিছুক্ষণ পরে আখানগর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জবায়দুর হক চৌধুরী তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় মামুনের উপর। কোনকিছু বোঝার আগে হামলাকারীরা তাকে নির্মমভাবে মারধর করেন এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলা চেপে ধরেন। একপর্যায়ে তার অন্ডকোষে লাথি মারলে মাটিতে নুয়ে পরেন মামুন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলে এই বর্বর শারীরিক নির্যাতন।


আহত সাংবাদিক মামুন অর রশিদ বলেন, কয়েক মাস আগে তাকে নিয়ে চাঁদাবাজির একটি রিপোর্ট করেছিলাম। সে প্রায় মুঠোফোনে আমাকে হুমকি  দিত। আজকে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে। হায়াত ছিল বলে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি। এঘটনায় আমি তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।


এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা জুবায়দুর রহমান চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, সে আমাকে নিয়ে একটা লেখা লিখেছিল ফেসবুকে। তারপর থেকে তাকে দেখা করতে বলেছিলাম। সে দেখা করেনি। আজকে তাকে বাজারে পেয়েছি তারপরে তাকে পেটানো হয়েছে। তবে তার মাইড় কম হয়েছে।


এ ঘটনায় সাংবাদিক নির্যাতনকারী বিএনপি নেতা জবায়দুল হক চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজনকে আসামী করে রুহিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি থানা কর্তৃপক্ষ মামলাটি রুজু করেনি।


এ বিষয়ে রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম নাজমুল কাদের এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করেননি।