চিরকুটে দুইজনকে দায়ী করে ভূরুঙ্গামারীতে কিশোরীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , নিজস্ব প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: রবিবার ১২ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৭:৩৩ অপরাহ্ন
চিরকুটে দুইজনকে দায়ী করে ভূরুঙ্গামারীতে কিশোরীর আত্মহত্যা

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নিজের মৃত্যুর জন্য দায়ী দুই ব্যক্তির নাম চিরকুটে লিখে আত্মহত্যা করেছে এক কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কেদার গ্রামে। আত্মহত্যা করা কিশোরীর নাম সুবর্ণা আক্তার সুমনা (১৭)। সুমনা পশ্চিম কেদার গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।


চিরকুটে লেখা রয়েছে, “আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী জাহেদা। আমার জীবনটা নষ্ট করেছে কাওছার। আমার জীবনের মূল্য নেই, এসবের পিছনে সব দায়ী জাহেদা, আমি এই দুনিয়া থেকে চলে যাইতেছি, আমি তখনি শান্তি পাব যখন জাহেদা আর কাওছার সারা জীবন জেলে ধুকে ধুকে মরবে।”


পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কিশোরী সুমনার সাথে প্রতিবেশী আজাদ আলীর ছেলে কাওছারের (২২) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মন দেয়ানেয়ার একপর্যায় তাদের মাঝে শারিরীক সম্পর্ক হয়। এতে কিশোরী গর্ভধারণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে সুমনার পরিবার বিয়ের জন্য কাওছারকে চাপ দেয়। 


এঘটনায় কয়েক দফা গ্রাম্য শালিস হয়। তবে এতে কোন সুরাহা হয়নি। অপর দিকে কাওছার গোপনে অন্যত্র বিয়ে করে। নিরুপায় হয়ে সুমনার মা বাদী হয়ে কাওসারসহ ৪জনের নামে কুড়িগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত কচাকাটা থানাকে মামলটি ১০ জানুয়ারীর মধ্যে রেকর্ড করার আদেশ দেয়।


প্রেমের স্বীকৃতি ও অনাগত সন্তানের পিতৃ পরিচয় না থাকায় সুমনা গত ৮ জানুয়ারি বুধবার রাতে বিষপান করে। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। 


রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১১ জানুয়ারী শনিবার সকালে মারা যায় সুমনা। ময়না তদন্ত শেষে আজ (১২ জানুয়ারী) রেববার সন্ধ্যায় সুমনার মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।


কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন জানান, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর মামলাটি ৭ জানুয়ারী রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।