বেলজিয়াম সরকার এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে যৌনকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। বিশ্বে প্রথমবারের মতো যৌনকর্মীরা পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি, স্বাস্থ্যবিমা এবং অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার অধিকার অর্জন করলেন। এই পদক্ষেপ যৌনকর্মীদের প্রতি বঞ্চনা ও বৈষম্যের অবসান ঘটানোর একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২২ সালে বেলজিয়ামে যৌন পেশাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবে এবার সরকার এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের অন্যান্য পেশাজীবীদের মতোই সামাজিক ও আইনি সুরক্ষার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন আইনের মাধ্যমে যৌনকর্মীদের কর্মসংস্থানের শংসাপত্র দেওয়া হবে। এর ফলে তাঁরা পেনশন, স্বাস্থ্যবিমা, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং অসুস্থতাজনিত ছুটির মতো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
নতুন আইন অনুযায়ী যৌনকর্মীদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ‘প্যানিক বাটন’-এর মতো প্রযুক্তিগত সুবিধাও রাখা হয়েছে। কোনো খদ্দেরের আচরণ বা কাজ নিয়ে অস্বস্তি হলে এই বোতামে চাপ দিয়ে তাৎক্ষণিক সাহায্য চাইতে পারবেন তাঁরা।
তবে নতুন আইন নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। সমালোচকরা দাবি করছেন, যৌনকর্মীদের সুরক্ষার নামে দেহব্যবসা এবং নারী পাচারের মতো গুরুতর সমস্যাগুলিকে পরোক্ষভাবে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ অপরাধমূলক কার্যকলাপের সুযোগ করে দিতে পারে।
পালটা যুক্তি হিসেবে আইন সমর্থকরা বলেছেন, নতুন আইনের ফলে যৌনকর্মীদের ওপর নিয়োগদাতাদের নির্যাতন ও শোষণ বন্ধ হবে। পাশাপাশি, কর্মক্ষেত্রে যৌনকর্মীরা নিরাপত্তা ও মর্যাদা লাভ করবেন।
বেলজিয়ামের এই পদক্ষেপ যৌনকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। যদিও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এটি অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।