দেশের ৫৯টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগের পর মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কেএম আলী আযমের কক্ষে উপসচিব পর্যায়ের একদল কর্মকর্তা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। ডিসি পদে নিয়োগে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।
সরকার সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) প্রথম দফায় ২৫টি জেলায় এবং মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) আরও ৩৪টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়। এই নিয়োগের তালিকায় নিজেদের নাম না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন একদল উপসচিব। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিসি হওয়ার জন্য প্রতীক্ষায় থাকা সত্ত্বেও তাদের এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং হতাশ হয়ে পড়েন।
বিক্ষুব্ধ উপসচিবদের অনেকেই পূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পদোন্নতিবঞ্চিত ছিলেন। তাদের বেশিরভাগই সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার দ্বারা উপসচিব পদে পদোন্নতি পান। নতুন ডিসি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই অসন্তোষ থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়েন।
বিক্ষোভের সময় একাধিক উপসচিব অভিযোগ করেন যে, ডিসি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি এবং যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তারা আরো অভিযোগ করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাদের মতামত কিংবা মত প্রকাশের সুযোগও দেওয়া হয়নি। এই ধরনের অবহেলা এবং অগ্রহণযোগ্য আচরণের বিরুদ্ধে তারা তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান দাবি করেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কেএম আলী আযম পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেন যে, তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে। তিনি তাদের জানান যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সচিবালয়ে এই ধরনের বিক্ষোভ একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। সাধারণত, সরকারি কর্মকর্তারা তাদের অভিযোগগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেন। তবে, এবার যে ধরনের প্রতিবাদ দেখা গেছে, তা সরকারি চাকরির পরিবেশে বিরল।
এই ঘটনার পর থেকে নতুন ডিসি নিয়োগের প্রক্রিয়া এবং সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিক্ষোভ সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদ্যমান অসন্তোষের প্রতিফলন হতে পারে। তারা মনে করছেন, সরকারের উচিত দ্রুত এই বিষয়গুলো সমাধান করা, যাতে প্রশাসনের কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।