ভারতের আসাম রাজ্যের হাইলাকান্দি শহরে মসজিদের বাইরে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় তিন পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। এর পরই ওই এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার ওই মসজিদের বাইরে নামাজ পড়ছিলেন মুসল্লিরা। এ সময় কিছু লোকজন তাঁদের ওপরে পাথর ছুড়লে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। এর পরই ওই এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। তবে গত বুধবারের একটি ঘটনা নিয়ে এ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত। ওইদিন মসজিদের ভেতরে নামাজ পড়ছিলেন মুসল্লিরা। ওই সময় মসজিদের বাইরে রাখা তাঁদের মোটরসাইকেলে ভাঙচুর চালায় কিছু লোকজন। এর পরই এ ঘটনার বিচার চাইতে স্থানীয় থানায় গিয়ে এজাহার দায়ের করেন তাঁরা।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে মসজিদের বাইরের রাস্তায় নামাজ পড়ার কথাও জানান তাঁরা। পরে শুক্রবার তাঁরা কথামতো মসজিদের বাইরের রাস্তাতেই নামাজ পড়া শুরু করেন। এ সময় তাঁদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়। আর এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি করে। হাইলাকান্দির ডেপুটি কমিশনার কীর্তি জালি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে সব সম্প্রদায়ের মানুষকে আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন আসামের আবগারিমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। তিনি বলেন, ‘যেকোনো সহিংসতা ছাড়াই এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’ এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি। সাউথ এশিয়ান মনিটর জানায়, জেলা প্রশাসনের দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় জেলা প্রশাসন কারফিউ জারি করেছেৃ”।
পরে সন্ধ্যায় ১২ মে পর্যন্ত পুরো জেলাতে ওই কারফিউ সম্প্রসারিত করা হয়। হাইলাকান্দির ডেপুটি কমিশনার কীর্তি জাল্লি বলেন, বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে ভিন্ন সম্পর্কের কারণে তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে সঙ্ঘাতে লিপ্ত হচ্ছে, যেটা সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূফ নিতে পারে.. সে কারণেই কারফিউ দেয়া হয়েছে”। জেলা প্রশাসন বলেছে, আসাম রাইফেলস ও সিআরপিএফসহ কেন্দ্রীয় বাহিনীগুলোকে মোতায়েন করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাবাহিনীকেও তলব করেছে। হাইলাকান্দির মারওয়ারিপট্টি এলাকায় রমজানের প্রথম শুক্রবার জুমান নামাজের পর ঘটনার সূত্রপাত।
মুসল্লিরা এ সময় মসজিদের রাস্তার পাশে নামাজ পড়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতির সূত্রপাত হয়। পুলিশ সুপার মোহনিশ মিশ্র এ তথ্য জানিয়েছেন। এলাকার অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ এটা নিয়ে আপত্তি জানালে সংঘর্ষ শুরু হয়। মিশ্র বলেন, “এ সময় পাথর নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে কারণ পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে উঠছিল”। স্থানীয়রা দাবি করেছেন যে, উত্তেজিত জনতা এ সময় আগুন দিযেছে, দোকান পাটে হামলা করেছে এবং যানবাহনে আগুন দিয়েছে। মিশ্র বলেন, মারওয়ারিপট্টির ছোট্ট মসজিদটির আশেপাশে বিভিন্ন ধরণের বাজার রয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া, এসএএম।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।