স্বাস্থ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১৮ দিনে সাড়ে ১৪০০ কর্মকর্তার বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শুক্রবার ২২শে নভেম্বর ২০২৪ ০৪:৩০ অপরাহ্ন
স্বাস্থ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১৮ দিনে সাড়ে ১৪০০ কর্মকর্তার বদলি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গত ১৮ দিনে ১৪০০-এরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলি আদেশ দেওয়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এসব বদলির মধ্যে রয়েছে মেডিকেল অফিসার থেকে শুরু করে পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন সরকার গঠনের পর একাধিক কর্মকর্তাকে বদলির মাধ্যমে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং আর্থিক লাভের আশায় ঘটানো হচ্ছে।


অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর অধিদপ্তরের কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এর পরবর্তী সময়ে নতুন মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিনের অধীনে অধিদপ্তরের স্বাভাবিক কাজকর্ম পুনরায় শুরু হওয়ার আগে, বিভিন্ন আন্দোলন ও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। তবে বর্তমান প্রশাসন বলছে, ১৮ দিনে এত বিপুলসংখ্যক বদলি কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়; এটা শুধুমাত্র নিয়মিত কাজের অংশ।


তবে, পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন যে, এসব বদলি আসলে নতুন সরকার গঠনের পর তাদের নিজেদের লোকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর প্রক্রিয়া। তারা জানান, সাধারণত এক মাসে তিন থেকে চারজনের বেশি বদলি করা হয় না, কিন্তু এই সময়ে একাধিক পদের বিপরীতে একযোগে প্রায় ২৭৭ জন কর্মকর্তার বদলি করা হয়েছে, যা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এমনকি কিছু কর্মকর্তার প্রশিক্ষণও অসম্পূর্ণ থাকায় তাদের উচ্চতর ডিগ্রি ও ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ এ বিষয়ে জানান, "যাদের বদলি করা হয়েছে, তাদের অনেকের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে, আবার অনেকে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষমাণ ছিলেন। কিছু বদলি স্বাভাবিক কাজের অংশ হিসেবেই করা হয়েছে।" তবে তার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বেশ কিছু কর্মকর্তা। তারা বলছেন, অতীতে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি, যেখানে প্রশিক্ষণ শেষ না হওয়া অবস্থাতেও কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নথি অনুযায়ী, ২২ ও ২৩ অক্টোবর মোট ২৭৭ জন কর্মকর্তার বদলি আদেশ দেওয়া হয়, যা পরিস্থিতির আরো জটিলতা সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া, বদলি সংক্রান্ত অস্বচ্ছতা এবং এর ফলস্বরূপ প্রশাসনিক অকার্যকারিতা নিয়ে নানা বিতর্ক ও প্রশ্ন উঠেছে।


নতুন সরকার আসার পর এসব বদলির পেছনে মূল কারণ কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে প্রশাসনিক দিক থেকে এই পদক্ষেপগুলো নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রমের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।