প্রকাশ: ৫ ডিসেম্বর ২০২০, ২২:৪৮
গ্রামবাংলার অপরূপ সৌন্দর্যময় চিরচেনা এক দৃশ্য ছিলো পলো দিয়ে মাছ ধরা।কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার সেই প্রাচীন ঐতিহ্য। আগেকার দিনের মতো এখন আর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নৌকায় পাল তুলে মাঝিদের গান ধরতে দেখা যায় না।দেখা যায় না পাল তোলা নৌকা।এগুলো এখন গল্পের মতো মনে হয়।পলো" তলাবিহীন কলসির আদলে বাঁশ ও বেতের সংমিশ্রণে তৈরি মাছ ধরার একটি বিশেষ যন্ত্র। গ্রাম-গঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় তার নাম ‘পলো’। ভূঞাপুরে পলো দিয়ে মাছ ধরাকে বলা হয় "পলো বাওয়া"। শীতের সময় খাল-বিল, বাওড় পুকুরে পানি কমে গেলে দলে দলে লোক পলো নিয়ে মাছ ধরতে নামতেন। এখনো পলো দিয়ে মাছ ধরার প্রচলন কিছুটা চালু আছে, তবে আগের মতো নয়। কালের বিবর্তণে হারিয়ে যাচ্ছে পলো দিয়ে মাছ ধরা।
‘পলো’ মাছ ধরার কাজ ছাড়াও হাঁস-মুরগী ধরে রাখার কাজেও ব্যবহার হতো। শুকনো মওসুমে পৌষ মাস থেকে শুরু করে চৈত্র মাস পর্যন্ত শুরু হয়ে যেত পলো দিয়ে মাছ ধরার মহা উৎসব। লুঙ্গি আটঘাট করে বেধে অথবা ‘কাছা’ দিয়ে এক সঙ্গে দল বেধে নান্দনিক ছন্দের তালে তালে ঝপ ঝপাঝপ শব্দে পলো দিয়ে মাছ ধরা শুরু করতেন এবং সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতেন সামনের দিকে। অনেকেরই মাথায় গামছা বাধা থাকতো।
চলতো পলো দিয়ে পানিতে একের পর একচাপ দেয়া আর হৈ হুল্লোড় করে সামনের দিকে ছন্দের তালে তালে এগিয়ে যাওয়া। অনেকেই গানও ধরে ফেলতেন।পলোটিকে কাদা মাটির সাথে ভালোভাবে চাপ দিয়ে ধরে রাখা হতো যাতে নিচের কোনোদিকে ফাঁক না থাকে। এরপর ওপরের দিকে যে খোলা মুখ থাকে তাতে হাত ঢুকিয়ে মনের আনন্দে ধরে আনা হতো সেই শিকার। এইতো মাত্র কয়েক বছর আগেও শীতের সময় খাল-বিল, পুকুরে পানি কমে গেলে দলে দলে লোক পলো নিয়ে মাছ ধরতে নামতেন। এখনো পলো দিয়ে মাছ ধরা আছে, তবে আগের মতো নয়। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে পলো দিয়ে মাছ ধরা।