প্রকাশ: ২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৮
খাগড়াছড়ির গুইমারা ও সদর উপজেলায় সাম্প্রতিক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার কারণে পুলিশ তিনটি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় মোট দেড় হাজারের বেশি অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব মামলা বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা হয়েছে।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক চৌধুরী জানান, ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ধানক্ষেত থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ১০০ জন অজ্ঞাত আসামি এবং হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মামলায় আড়াইশ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। নিহতদের পরিবার বা ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা না করায় পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেছে।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার মহাজন পাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় প্রায় ৭০০–৮০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে জেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে খাগড়াছড়ি। ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ডাকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসক দলের মেডিকেল পরীক্ষায় ওই কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
ধর্ষণ অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া অস্থিরতা কয়েক দিনের মধ্যে সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে রূপ নেয়। গুইমারায় তিনজনের নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। পুলিশের তথ্যমতে, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় মোট তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই মামলায় দেড় হাজারের বেশি অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যা জেলার সাম্প্রতিক সহিংসতার চিত্রকে প্রমাণ করে। পুলিশ বলেছে, মামলার দ্রুত তদন্ত ও অপরাধীদের সনাক্তকরণের জন্য সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত, তবে প্রশাসনের উপস্থিতি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।