আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার অফুরন্ত প্রেরণা এবং সাহসের বর্ণিল ঠিকানা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি জেগে আছেন বলেই নিশ্চিন্তে ঘুমায় বাংলাদেশ।সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মোনাজাত-পূর্ব বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।ওবায়দুল কাদের বলেন,আজ আমাদের জাতীয় জীবনের এক স্মরণীয় দিন।১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমাদের আস্থার সোনালি দিগন্ত, প্রেরণার দীপ্যমান শিখা, আমাদের স্বপ্নময় অর্জনের কাণ্ডারি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘শৈশব থেকে আজ অবধি সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা কখনওই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না।কণ্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়ে পৌঁছেছেন আজকের অবস্থানে।দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অতন্দ্রপ্রহরী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।৭৩তম জন্মবার্ষিকীতে আপনাকে জানাই এ দেশের গণমানুষের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা।মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি- আপনার সাফল্য, সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘজীবন।’
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন,পিতার পাঠশালায় রাজনীতির পাঠ নেয়া কন্যা ইডেন কলেজের নির্বাচিত ভিপি হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।সে ধারাবাহিক পথপরিক্রমায় আজ হয়ে উঠেছেন পিতার ছায়া, আদর্শিক উত্তরাধিকার।এ দেশের কোটি মানুষের হুদয়ের স্পন্দন। মমতার আধার। এ অর্জিত আস্থার গহীনে নেই কোনো ম্যাজিক।সূত্রাবলি আর উৎসবলি-এ অর্জনের পেছনের রহস্য তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা।’
তিনি বলেন, ‘তিনি ভালোবাসেন দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি। তিনি অসহায়, দরিদ্র মানুষের ভালোবাসার ঠিকানা। উদার আকাশের মতো বিস্তৃত যার হৃদয়।তার শক্তি হলো- সততা, পরিশ্রম, মানবিকতা আর পিতার মতো দেশের মানুষের প্রতি অপার ভালোবাসা। তাই তো তিনি আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বনেতাদের কাতারে, মর্যাদার আসনে।বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় তার দক্ষতা এবং দূরদর্শিতার প্রশংসা করে যাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়।কাদের বলেন,সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক নেতৃত্বের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি।স্বীকৃতি পেয়েছেন ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’র।তার উদাহরণ তিনি নিজেই।এ দেশে তার জনপ্রিয়তা এখন সবার শীর্ষে। তিনি দলের চেয়েও অধিক জনপ্রিয়।’
তিনি বলেন,৭৫ পরবর্তী সময়ে এ দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সফল ডিপ্লোম্যাটের (কূটনীতিক) নাম শেখ হাসিনা।গত ৪৫ বছরে এ দেশের সবচেয়ে সৎ এবং সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক ও দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা। তিনি আছেন বলেই দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে।তিনি আছেন বলেই বিনিময় হয়েছে যুগ যুগ ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল। তার হাত ধরেই বিক্ষুব্ধ পার্বত্যাঞ্চলে বইছে শান্তির সুবাতাস।তিনি আছেন বলেই আমরা জয় করেছি আরেক বাংলাদেশের সমান সুনীল সমুদ্রসীমা, দ্বার খুলেছেন সম্ভাবনাময় ‘ব্লু ইকোনমি’র।তিনি আছেন বলেই আমাদের স্বপ্নের ডানা আকাশ ছাড়িয়ে মহাকাশে পৌঁছেছে,আমরা প্রবেশ করেছি স্যাটেলাইট যুগে।’
‘তিনি আছেন বলেই পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর ক্লাবে নতুন সংযোজন বাংলাদেশ। তার সাহসী এবং দক্ষ নেতৃত্বে তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে বাংলাদেশ আজ নোঙর করেছে উন্নয়নশীল দেশের গর্বিত বন্দরে।দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের সোনালি ফসল নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু।এ সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক।বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে মহাসাগরের জলপ্রাচীর ভেদি সাবমেরিন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।তিনি জেগে আছেন বলেই নিশ্চিন্তে ঘুমায় বাংলাদেশ।’ওবায়দুল কাদের বলেন,শেখ হাসিনা এক আজন্ম উন্নয়ন-যোদ্ধার অপর নাম। হতাশ ও অসহায় প্রাণে যিনি সঞ্চার করেন জীবনের জয়গান।তিনি আমাদের সাহসের সোনালি দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছেন,বাড়িয়ে দিয়েছেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস।তাই তো আজ বিশ্বসভায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে মুজিবের সেই দুঃখী বাংলা।বাংলাদেশ আজ বিশ্বমানচিত্রে অর্জনের সোনালি দিগন্ত পানে অদম্য গতিতে ছুটে চলা এক ধাবমান অশ্ব।’
‘শেখ হাসিনার প্রতিটি কর্ম, সিদ্ধান্ত এবং চর্চা আমাদের নেতাকর্মীদের জন্য অনুসরণীয় বার্তা’ বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।তিনি বলেন, ‘এ দেশের কোটি কোটি মানুষ এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মী এ দিনে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছে।আপনিই এ দেশের এগিয়ে যাওয়ার অফুরন্ত প্রেরণা এবং সাহসের বর্ণিল ঠিকানা।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আহমেদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আবদুস সোবহান গোলাপ, নজিবুল্লা হীরু, আব্দুস সবুর, বিপ্লব বড়ুয়া ও সায়েম খান।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।