চলমান জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পাশাপাশি গত সোমবার (১৫ জুন) সম্পূরক বাজেট পাস হওয়ার সময় অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার সম্পূরক বাজেট পাস হওয়ার সময় অধিবেশন কক্ষে টিপু মুনশি উপস্থিত থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত ১৫ জুন সংসদে সম্পূরক বাজেট পাস হওয়ার সময় অধিবেশন কক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৪ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রী হিসেবে শপথ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তা টিপু মুনশি বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি। এদিকে প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত বাণিজ্যমন্ত্রী এভারকেয়ার হাসপাতালে (আগের অ্যাপোলো হাসপাতাল) ভর্তি হয়েছেন।
শারীরিকভাবে খুব বেশি অসুস্থ না হলেও বুধবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তিনি বলেন, করোনা পজিটিভ হওয়ায় কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রী এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে মন্ত্রী নিজেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। বুধবার বিকাল ৫টার দিকে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কিছু উপসর্গ দেখা দিলে বুধবার সকাল ৯টায় করোনা টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিই। কিছুক্ষণ আগে নমুনার রেজাল্ট পজিটিভ আসে।’
করোনায় আক্রান্ত হলেও শারীরিকভাবে তিনি সুস্থ রয়েছেন। একই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। টিপু মুনশি ছাড়াও মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে গত ৬ জুন। এরপর ১২ জুন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তার স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ বানু এবং মন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) হাবিবুর রহমানের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। গত ১৪ জুন রাতে বেইলি রোডের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহকে ঢাকা সিএমএইচে নেয়া হয়। সেখানে রাতেই তার মৃত্যু হয়। পরে নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায়।
এদিকে চলমান জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে করোনাভাইরাসের কারণে ২৫ সংসদ সদস্যকে সংসদে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ সিনিয়র, কেউ অসুস্থ আবার কারও পরিবারের সদস্য অসুস্থ হওয়ায় সংসদ অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া একজন এমপি হাসপাতালের মালিক হওয়ায় তাকেও সংসদে না আসার অনুরোধ করা হয়েছে।
সংসদ হুইপের কার্যালয় থেকে ওই ২৫ এমপির তালিকা করে তাদের সংসদে না আসার অনুরোধ জানানো হয়। তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কয়েকজন ছাড়া বেশির ভাগ এমপি-মন্ত্রীকে তিন কার্যদিবসের বেশি সংসদে যোগ না দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। তবে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম সিদ্দিকীসহ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের এ বিষয়ে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তারা তিনদিনের বেশি সংসদে যেতে পারবেন। এমনকি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা সব কার্যদিবসে উপস্থিত থাকতে পারবেন। তবে ওই তালিকা করার পর বেশ কয়েকজন এমপি-মন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।