কোন হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যু, খবরে মারা গেলেন বাবাও

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার ৮ই জুন ২০২০ ১২:০২ পূর্বাহ্ন
কোন হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যু, খবরে মারা গেলেন বাবাও

হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরা ঘুরি করে চিকিৎসা না পেয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের শাহ আলম (৫৫) নামে ডায়বেটিসে আক্রান্ত এক রোগী মারা গেছেন। শাহ আলমের মৃত্যুর খবরে স্ট্রোক করে একই রাতে মারা গেছেন তার বৃদ্ধ বাবা আবদুল বারেক (৮০)। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

শাহ আলম বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কোরপাই এলাকার মুদি ব্যবসায়ী।

শাহ আলমের ছেলে শরীফ জানান, শনিবার রাত ১১টায় তার বাকার শরীর খারাপ হলে হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রথমে ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে তাকে শুধু স্যালাইন দিয়ে এক ঘণ্টা রেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলে। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে নিলে সেখানে এক্স-রে করানোর কথা বলে এবং করোনা ছাড়া অন্য কোনো রোগী রাখে না বলে জানায়।

তাদের কথা মতো সেখান থেকে কুমিল্লা ডায়াবেটিস হাসপাতালে নেয়া হলে তারাও আইসিইউতে নিতে হবে বলে মুন হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নেয়ার পরও আব্বাকে বাঁচাতে পারিনি। রাত ২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত আমরা এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতালে খালি ছোটাছুটিই করেছি।

শাহ আলমের ভগ্নীপতি একই বাড়ির মো. রফিক জানান, শাহ আলম করোনায় আক্রান্ত এমন কিছু আমরা বুঝতে পারিনি। এ ছাড়া তার জ্বর, সর্দি, কাশি এমন ধরনের কোনো লক্ষণ ছিল না। শাহ আলমের মৃত্যুর পর সেই শোকে তার বাবা আবদুল বারেকও মারা যান।

একই বাড়ির শাহ আলমেরই আরেক ভগ্নীপতি সুন্দর আলী জানান, শাহ আলমকে কয়েকটা হাসপাতালে নেয়া হলেও সামান্যতম চিকিৎসা দেয়া হল না।

বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. মীর হোসেন মিঠু জানান, এটা খুবই দুঃখজনক যে, শাহ আলম কোথাও চিকিৎসা পাননি। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন আইসোলেশনের ব্যবস্থা আছে, তার যদি করোনাও হতো তাহলেও তাকে চিকিৎসা দেয়ার কথা ছিল। আর করোনার লক্ষণ উপসর্গ না থাকলে অন্য হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেয়ার কথা ছিল।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান জানান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভাবে কেউ ফিরে যাওয়ার কথা নয়। তবে যদি আইসিইউতে নেয়ার মতো রোগী হয়, তাহলে অন্য হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলা হয়ে থাকতে পারে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সবগুলো আইসিইউ এখন শুধু করোনা রোগীদের জন্য বরাদ্দ।