নিয়ম মানছে না জনগণ, হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৭ই মে ২০২০ ০৩:৪৪ অপরাহ্ন
নিয়ম মানছে না জনগণ, হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ধীরে ধীরে মহামারি রুপ ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন দেশে ৮-১০ জন মারা যাচ্ছে ও সংক্রমিত হচ্ছেন শত শত মানুষ। তবুও সাধারণ মানুষের টনক নড়ছে না। নিয়ম না মেনে সেই জনসমাগম করছেই, এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যাচ্ছেই ও প্রশাসনের কাছে কোনো না কোনো অযুহাত দেখি তারা বাইরে বের হচ্ছেই। 

আর এই আমজনতার মাঁঝে সচেতনতা বাড়িয়ে  নিময় অনুযায়ী চলাফেরা করাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।  মানুষ লকডাউন না মেনে বিনা প্রয়োজনে চলাফেরা করছে এতে করোনা বিস্তারের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।দেশে সব ধরনের গণজমায়েত ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরেও অনেকে সতর্কতা না মেনে চলে একসাথে জড়ো হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পরেছে পুলিশ-প্রশাসন। 

সাভার উপজেলাকে করোনা মুক্ত রাখতে গত ১৩ এপ্রিল সাভারে সীমান্ত এলাকাগুলোর সড়কপথ পরিপূর্ণ ভাবে লকডাউন করার ঘোষণা দিয়েছিলো উপজেলা প্রশাসন।  মিরপুর এলাকাটি বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য বহুল ঝুঁকিপূর্ণ। এই এলাকাটি সাভারের বিরুলিয়ার খুব কাছেই। মিরপুর-বিরুলিয়া সংযোগ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ এই দুই এলাকায় যাতায়াত করে। তাই সব সীমান্ত সড়কের মত এটিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

ঘোষণার পরেও সাধারণ মানুষ পুলিশের কাছে নানা অযুহাতে মিরপুর থেকে সাভারে আসচ্ছেন আবার সাভার থেকে মিরপুর যাচ্ছেন। এই বিরুলিয়া সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে বেশ কয়েকবছর যাবৎ রয়েছেন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) অপুর্ব দত্ব।  

তিনি (০৫ মে) মঙ্গলবার জানান, লকডাউনের নির্দেশনা পাওয়ার পর পরই তাদের এখানের সড়কটিতে চেকপোস্ট বসিয়েছে। ২৪ ঘন্টায় তাদের চেকপোস্টের কার্যক্রম চলে। একমাত্র জরুরি সেবার পরিবহন ছাড়া আর কোনো পরিবহন বা মানুষকে যাতায়াত করতে দেওয়া হয় না। কিন্ত কিছু মানুষ আছে যারা অসচেতন ভাবে বাসা থেকে বের হয়ে ঘুরাঘুরি করে৷ তাদেরকে প্রশ্ন করা হলে কোনো না কোনো মিথ্যার আস্রয় নিয়ে তাদের কাছ থেকে বেঁচে যায়। 

অপুর্ব দত্ব বলেন, আমরা আমাদের পরিবারের কথা চিন্তা না করে দেশের মানুষের জন্য নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি। করোনা থেকে বাচতে বর্তমানে সবার জন্য সামাজিক দুরত্ব থাকাটা বেশি জরুরি। কিন্তু আমার দ্বায়িত্ব পালন কালে দেখেছি অনেকই যেনো আমাদেন সঙ্গে মজা করছে। বিভিন্ন সময় গুজব ছাড়াচ্ছে এবং যেখানে সেখানে মানুষ জনসমাগম করছে। আমরা এখন কোনো জায়গায় অপারেশন গেলে মানুষ আমাদের দেখতে চলে আসে তারা একবারও ভাবে না তাদের জীবনোর ঝুঁকি রয়েছে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। 

এদিকে প্রশাসনের সঙ্গে মনে হয় লুকোচুরিই খেলছেন মানুষ। পুলিশ একদিকে টহল দিলে মানুষ অন্যদিকে জনসমাগম করে৷ আবার পুলিশ দেখলে সামাজিক দুরত্বের গুরুত্ব আছে পুলিশ না থাকলে এর কোনো বালাই নেই৷ এমন এক অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ। 

তিনি বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঢাকায় প্রবেশের একটি উল্লেখযোগ্য পথ। এই প্রবেশ পথে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন স্থানে টহলের ব্যবস্থা করছেন৷ কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক বিষয় হচ্ছে চেকপোস্টের আগে যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছে আবার চেকপোস্টের পরে আবার গাড়িতে উঠছে। আসলে মানুষের মাঝে যদি নিজ থেকে সচেতনতা না আসে তাহলে যত আইন করা হক না কেন, এটার বিপরীতে মানুষ নিজস্ব একটি পদ্ধতি বের করে নিয়ে আইন লঙ্ঘনের চেষ্টা করে৷

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব